জেলা পরিষদের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

জেলা পরিষদের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জুলাই ১৪, ২০২৩
জেলা পরিষদের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনা

কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার খাইরুল আলমকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় জেলা পরিষদে ফুল দিয়ে এবং শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয়।

জেলা পরিষদের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনা

জেলা পরিষদের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনা

জেলা পরিষদের উদ্যোগে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনা

দৈনিক কুষ্টিয়া’র প্রকাশক ও সম্পাদক ড. আমানুর আমানের সঞ্চালনায় এবং জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জয়নুল আবেদীন’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান ।

বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী এবং দৈনিক আন্দোলনের বাজার পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক এবং কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও চ্যানেল আই এর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি আনিসুজ্জামান ডাবলু ।

google news

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব তরিকুল ইসলাম মানিক, জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী মাছুমা পারভীন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক কার্যকরী সভাপতি আতাহার আলীসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ ।

বিদায়ী পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, আমি প্রায় দুই বছর পাঁচ মাস এই জেলাতে কর্মরত ছিলাম এবং আমার অধীনে সাড়ে পনেরো শত থেকে ষোল শত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলো। সবাইকে নিয়ে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি জেলার আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার। আমি চেষ্টার কোন বাকী রাখি নাই, অমানুষিক পরিশ্রম করেছি। আমি কখনোই মোবাইল সাইলেন্ট করিনি। আমি বিশ্বাস করি আমার সকল সদস্য আমার সাথেই ছিলো। জেলাবাসীও আমার সাথেই ছিলো। সকলের সার্বিক সহোযোগিতা ছাড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব না ।

বিদায়ী পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন- গত আড়াই বছর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এক এক সময় এক এক ধরনের কৌশল অবলম্বন করা লেগেছে। বিশেষ করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, কোন প্রকার রক্তপাতহীন নির্বাচন, যেখানে কোন সেন্টারে ভোট বন্ধ হয়নি। আমাদের এই বাংলাদেশ অনেক কষ্ট এবং রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ কালো রাতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর সশস্ত্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ত্রিশ লক্ষ মানুষের জীবণের বিনিময়ে এবং দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের এই বাংলাদেশটা পেয়েছি। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উন্নয়নের ধারা অব্যহত আছে। আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন ছিলাম। অমাদের কাজ ছিলো আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি এবং করবো। দেশের আইন শৃঙ্খলা ঠিক থাকলে অবশ্যই টেকসই উন্নয়ন হবে।

সুপার খাইরুল আলমের বিদায় সংবর্ধনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী বলেন, আমরা রাজনীতি করি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারনে তার সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। উনার বিদায় লগ্নে খারাপ লাগছে। উনি যেহেতু সরকারী চাকুরী করেন, বিদায় তো দিতেই হবে । উনি কুষ্টিয়াতে আসার আগে এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, একজন ভালো ছেলেকে আপনাদের জেলায় পাঠালাম। আসলেই পুলিশ সুপার খাইরুল আলম একজন ভালো মানুষ এবং ভালো মনের মানুষ। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিরোধী দলে ছিলাম, সরকারী দলে আছি, তবে এই রাজনৈতিক জীবনে একজন ভালো মানুষ পেয়েছিলাম। সিরিয়ালি যদি মৃত্যু হয় তাহলে উনাদের আগেই আমাদের মুত্যু হবে একথা নির্বিঘ্নে বলা যায়। তবে দেখে যেতে চাই, দেখে যেতে পারবো কি না জানিনা, দোয়া রইলো উনি উনার কর্ম জীবণে সর্বোচ্চ জায়গায় অধিষ্ঠিত হবেন। সবাই দোয়া করবেন আমরা যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খাঁন বলেন, সরকারী কর্মকর্তাদের বদলি একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেই ধারাবাহিকতায় পুলিশ সুপার খাইরুল আলম আমাদের জেলা ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তবে কিছু কিছু মানুষ তার ভালো কর্মের কারণে মানুষের মনে গেঁথে থাকে, বিদায়ী পুলিশ সুপার খাইরুল আলম ঠিক তেমনি একজন মানুষ। অনেক পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া এসেছে এবং গেছে, অনেকেই আলোচিত এবং সমালোচিত হয়েছে। কুষ্টিয়াতে দায়িত্ব পালন করা সহজ বললে ভূল হবে। এই জেলার অনেক সুনাম সুখ্যাতি আছে, কুষ্টিয়া সাংস্কৃতিক রাজধানী। স্বাধীনতা যুদ্ধেও এই জেলার গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। কুষ্টিয়তে বিভিন্ন সমস্যাও আছে। এক সময় কুষ্টিয়া ছিলো সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য। কিন্তু সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে, একটা ভালো অবস্থানের মধ্যে দিয়ে পুলিশ সুপার মহোদয় সম্মান, সুখ্যাতি ও কর্ম দক্ষতার মধ্যদিয়ে তিনি বিদায় নিচ্ছেন। সে তার সবটুকু দিয়ে কুষ্টিয়ার মানুষকে সেবা করেছেন ।

সদর উদ্দিন খান আরো বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার সাথে পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, সাংবাদিক অথবা দলীয় নেতা কর্মিই হোক, যে যেই অবস্থানে হোক, তাদের সাথে আমার একটা সম্পর্ক আলাদাভাবে থাকেই। পুলিশ সপুার এর সাথে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের বসার সুযোগ হয়েছে, আমি তার আন্তরিকতা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। কুষ্টিয়ার জন্য তিনি নিবেদিত প্রাণ হিসাবে কাজ করেছেন। আশা রাখি সে তার কর্মজীবনে সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হবেন।

উল্লেখ্য, খাইরুল আলম কুষ্টিয়ায় পুলিশ সুপার হিসাবে ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী যোগদান করেন। কুষ্টিয়াতে যোগদানের আগে তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। কুষ্টিয়া থেকে বদলির পরে তিনি হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করবেন।

আরও পড়ুন: