মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ : প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ : প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মার্চ ৬, ২০২৩
মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ : প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন : – সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, মানব সেবার ব্রত নিয়ে অসংখ্য গান লিখে গেছেন। তাঁর এই অমর সৃষ্টি সঙ্গীত কোন ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এদিকে যেমন তাঁর সৃষ্টি ছড়িয়েছে বিশ্বে তেমনি তাঁকে নিয়ে হচ্ছে উন্নতর গবেষনা। এই মহাজ্ঞানী মহাত্মা লালনের সৃষ্টির কৃর্তি আজ আর কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ীর মধ্যে আবদ্ধ নেই।

মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ : প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ : প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ : প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ

 

লালন সাঁই জাত-ধর্মের সিমাবদ্ধতার বাইরে মানুষকে সবার উপর তুলে ধরেছেন। মৃত্যুও ১৩৫ বছর পরও লালন সাঁইয়ের দেশ ও জাতীর জন্য আজো প্রাসঙ্গিক। মানুষকে শান্তির পথ দেখিয়েছে লালন সাঁইয়ের মানবতাবাদ ও বাউলতত্ব। লালন সাঁইয়ের বাউল মতবাদ আজ বিশ্বে সর্বাজনীন হয়ে উঠেছে। বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের স্মরণোৎসবে আত্মসুধ্যির উদাসীর টানে দেশ-বিদেশের বাউল-ফকিরবৃন্দরা ছুটে আসে এই আখড়া বাড়ীতে। তাঁর আত্মতত্ব মানুষকে শান্তির পথ দেখায়, সুখের সন্ধ্যান দেয় জাগতিক মোহ থেকে রাখে মুক্ত।

রবিবার রাতে ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়ীতে লালন একাডেমির আয়োজনে ৩ দিনব্যাপী বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের স্মরণোৎসব (দোলপূর্ণিমা) অনুষ্ঠানমালার ২য় দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। তনি আরো বলেন, আজকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে থাকা ভোলাই সাঁইয়ের লেখা লালনের গানের খাতা ফিরত পাওয়ায় এঅঞ্চলের বাউল গবেষকদের প্রাণের দাবী পূরণ হলো। এজন্য আমরা অধ্যাপক শক্তিনাথ ঝাঁ-এর কাছে তথা ভারত সরকারের কাছে চিরকৃজ্ঞ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাঁর কর্মসাধনা দেশের গন্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। সাধুরা এই আখড়াবাড়ীতে এসে সত্য পথে চলার মন্ত্রে দিক্ষা নিয়ে নিজেদের আলোকিত করছেন। আজকের আধুনিক পৃথিবীতে যে সব লেখক গবেষক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের উপর বই লিখেছেন আমি তাদের প্রত্যেককে আহবান জানাবো তারা যেন নিজ দায়িত্বে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়াতে লালন একাডেমির লাইব্রেরীতে এক কপি করে জমা দিয়ে যান। এতে করে দেশ-বিদেশের উৎসুক ভক্ত গবেষক ও আজকের প্রজন্ম লালন সাঁই সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবে।

 

google news

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের স্মরণোৎসবের ৩ দিনের অনুষ্ঠানমালার ২য় দিন রবিবার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের এমপি ব্যারিষ্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যাপক শক্তিনাথ ঝাঁ ,লালন একাডেমির এডহোক কমিটির সদস্য তাইজাল আলী খান, বিএমএ কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক এ.এফ.এম আমিনুল হক রতন, চাপড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, বিশিষ্ট কবি ও লেখক আম আরা জুই প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন লালন একাডেমির সাবেক সহসভাপতি আবদুর রশীদ চৌধুরী। লালন সাঁইজির ধ্যান-সাধনা, রচনা ও বাউলতত্ব নিয়ে আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন লেখত ও গবেষক ড.আমানুর আমান। শুভেচ্ছ বক্তব্য রাখেন লালন একাডেমির এ্যাডহক কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লালন একাডেমির এ্যাডহক কমিটির সদস্য কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সদস্য সেলিম হক।

আলোচনা শেষে অতিথিদের কুষ্টিয়া লালন একাডেমীর পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া, আত্মসুদ্ধির প্রতীক একতারা ও নবনির্মিত একতারার ক্রেষ্ট উপহার দিয়ে বরণ করে নেন।

প্রধান আলোচক আবদুর রশীদ চৌধুরী বলেন, আমি আমার বক্তব্যে অনেকবার বলেছি। এই গানের খাতা সম্পর্কে । আজকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে থাকা ভোলাই সাঁইয়ের লেখা লালনের গানের খাতা ফেরত পাওয়ায় আমি সহ এঅঞ্চলের বাউল গবেষকদের প্রাণের দাবী পূরণ হলো। তিনি বলেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ বাঙালী সংস্কৃতির এক মহান প্রতিনিধি। বাংলা সংস্কৃতির মূল ধারা লোকসংস্কৃতি। এই ধারাকে যারা পুষ্ট করেছে ফকির লালন তাদেরই একজন। সম্প্রদায় সম্প্রীতি ও ধর্মান্ধ মৌলবাদের বিরুদ্ধে তাঁর ফকিরীবাদ বাউলতত্ব মানুষের প্রধান দর্শন। লালন ফকির একই সঙ্গে মরমী এবং দ্রোহী, তার গানের ভেতর দিয়ে বাউল সাধনার নানা প্রসঙ্গ অনুসৃত হয়েছে। তার গানের ভেতর দিযে সমাজের অসঙ্গতি, কুপ্রথা সকল জাতপাতের ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।

দ্বিতীয় পর্বের সঙ্গীতানুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত লালন সঙ্গীত শিল্পী উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন লালন একাডেমীর সাবেক সদস্য বাউল আব্দুল কুদ্দুস। সঙ্গীত পরিবেশন করেন সমির বাউল, খুরশিদ আলম, সুফিয়া কাঙালিনী। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই সংগীত পরিবেশন।

স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানের সার্বিক উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন সিফাতুন নাহার, কাজী শারমিন নেওয়াজ, ফারহানা ইয়াসমিন ও কনক চৌধুরী।

আরও পড়ুন: