কুমারখালীতে জন্মদিনের কেক কাটার রাতেই তরুণীর আত্মহত্যা
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে কেক কেটে নিজের জন্মদিন পালন করার রাতেই গলায় ফাঁস দিয়ে পূর্ণিমা খাতুন (২০) নামে এক তরুণীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২২ আগষ্ট) রাত সাড়ে ১১ টা থেকে তিনটার মধ্যে উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সিংদহ গ্রামে এঘটনা ঘটে। নিহত তরুণী ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

কুমারখালীতে জন্মদিনের কেক কাটার রাতেই তরুণীর আত্মহত্যা
বুধবার (২৩ আগষ্ট) দুপুরে স্বজনদের ভাষ্য, পাঁচ বছরের দাম্পত্যজীবন তাদের কোনো সন্তান ছিলোনা। সেজন্য ১২ দিন আগে পারিবারিকভাবে যৌথ তালাক হয়। সেই অভিমানে জন্মদিনের রাতেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের হাবাসপুর গ্রামের মামুনের সাথে বিয়ে হয় পূর্ণিমা খাতুনের। তবে দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনে তাদের কোনো সন্তান ছিলোনা। সেজন্য গত ১১ আগষ্ট পারিবারিকভাবে তাদের যৌথ তালাক হয়।
এরপর গত মঙ্গলবার ছিল তার জন্মদিন। বাড়িতে রাতে কেক কেটে জন্মদিন পালন করা হয়। আর রাত তিনটার দিকে ছোট বোন দেখে পূর্ণিমা ঘরের বাঁশের আড়ার সাথে ঝুলছে।
বুধবার (২৩ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে স্বজন ও এলাকাবাসীদের উপচেপড়া ভিড়। ঘরের বারান্দায় মরদেহের সুরতহাল করছে পুলিশ।

এসময় পূর্ণিমার মা চম্পা খাতুন বলেন, তার মেয়ে খুব ভাল। মঙ্গলবার রাত জন্মদিন ছিল। রাতে সবাই মিলে আনন্দ – উল্লাস করে কেককেটে জন্মদিন পালন করা হয়েছে। এরপর রাত তিনটার দিকে তার ছোট মেয়ে দেখেন পূর্ণিমা বাঁশের ডাবে ওড়নায় ঝুলছে।
চাচা ইসরাফুল ইসলাম বলেন, স্বামী সন্তান জন্মদানে অক্ষম ছিল। সেজন্য ১২ দিন আগে ডিভোর্স হয়েছে। হয়তো সেই অভিমানে পূর্ণিমা আত্মহত্যা করেছে।
এবিষয়ে বাঁধবাজার পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ইমদাদুর রহমান বলেন, মরদেহের সুরতহাল করে কুষ্টিয়া মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তেরর রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
এদিকে যৌতুকের টাকা না পেয়ে বাবার বাড়িতে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মিরা খাতুন (১৮) নামে এক নববধূ আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২২ আগষ্ট) দিবাগত রাত ২টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মিরা খাতুন উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে ও একই ইউনিয়নের কোমরকান্দি গ্রামের বিপুল হোসেনের স্ত্রী।
নিহত মিরা খাতুনের চাচা মতিয়ার হোসেন বলেন, তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি গ্রামের বিপুল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় মিরা খাতুনের। বিয়ের পর থেকেই ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল স্বামী বিপুল হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন।

নির্যাতন সইতে না পেরে মঙ্গলবার বাবার বাড়ি ফিরে আসে এবং যৌতুকের টাকা চান। কিন্তু তার বাবা টাকা দিতে অসম্মতি জানালে বিকেলে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে পরিবারের লোকজন টের পেয়ে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে নিহত মিরার স্বামী বিপুল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনিএ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকিবুল ইসলাম জানান, একজন সদরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অপরজনের মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
