কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ১৬, ২০২৩
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

যথাযথ মর্যাদায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২৩ পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে ১৫ই আগস্ট সকাল ৮টায় কালেক্টরেট চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা মুক্তিযোদ্ধ সংসদ কমান্ড, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তর, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টে নিহত সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজার সভাপতিত্বে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

google news

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন- আমরা সবসময়ই বলে থাকি যদি আমাদের ১৫ই আগস্ট না থাকতো যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হতো তাহলে আজকের এই উন্নতি বা উন্নয়ন আরো বেগবান হত। বঙ্গবন্ধুর সরকারের তিন বছর ৭ মাস ৩ দিনে ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্র পরিচালনায় ১৫৪ টি আইন, ১৯৪ টি রাষ্ট্রপতির আদেশ, ১৫০ অধ্যাদেশ জারি করে ছিলেন যেটাকে বলা রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোকে জারি করা। এই অল্পসময়ে ১৮১টি কূটনৈতিক চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন এবং ১২১টি কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, যা খুবই বিস্ময়কর। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সালে মাত্র এক বছরে বঙ্গবন্ধু ৮৮২টি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন এবং তারপরের এক বছরে ১৩৮৫ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। সে সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যে বাজেট ঘোষণা করেছিলেন তা হলো ৭৫২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা । একটা শুন্য ট্রেজারী থেকে এতো বড় বাজেট তিনি ঘোষণা করেছিলেন। এছাড়া তিনি আত্মসামাজিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের সুদমুক্ত করতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন এবং কৃষকদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেন। এছাড়া শিল্পায়নের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি গ্রহণ করেন এবং এই অল্প সময়ে তিনি সকল বিষয়ে মনোনিবেশ করেছিলেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু আইনের বিষয়েও ১৯৭২ সালের ১৭ জুন স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাত্র সাত দিনের মাথায় তিনি হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার অধ্যাদেশ জারি করেন এবং কার্যক্রম শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন অসংবাদিত নেতা। তার এই সুদূরপ্রসার চিন্তাভাবনার জন্যেই আমরা বলে থাকি তিনি বেচে থাকলে বাংলাদেশ আরো উন্নত হতো। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এই স্বাধীনতার শক্তিকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাব।

কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন

এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব বলেন আজকের এই শোকের দিনে আমরা হারিয়েছি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমরা সকলেই জানি যেদিন বঙ্গবন্ধুকে নিহত করা হয়েছিল শুধু একটা দিন ছিল না তার পূর্ব থেকেই আমরা জাতি হিসেবে যেন দাঁড়াতে না পারি, বাংলাদেশ যেন আলাদা দেশ না হতে পারে তার জন্য অনেক আগে থেকেই হত্যা ষড়যন্ত্র চলছিলো। তিনি যখন ৬ দফা ঘোষণা করেন তারপরেই তাকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেয়া হয় এবং জেলে থাকার সময় তার বিরুদ্ধে যে সব চার্জ হয়েছিল তার বেশিরভাগ শাস্তিই ছিলই মৃত্যুদন্ড কিন্তু আল্লাহর বিশেষ রহমতে ও বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসায় তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসেন। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে যখন বন্দি ছিল কখনো তার বিরুদ্ধে যে শাস্তি আনা হয়েছিল তা হলো মৃত্যুদন্ড। তবে সারা বাংলার মানুষ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হয় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি পান।

তারপর ১৯৭৫ সালের আজকের দিনে বাংলাদেশের সবথেকে শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আমাদের মধ্য থেকে কেড়ে নেয়। পরবর্তীতে একুশ বছর পরে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন। এতোকিছুর পরেও বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা কুলাঙ্গার গুলার মধ্যে মাত্র পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, বাদবাকি কেউ মৃত এবং পালিয়ে আছে। যারা পালিয়ে আছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পলাতক খুনি আসামিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। আমরা যে প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ একদিন আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে তার জন্য আমরা আর স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় দেখতে চায়না, তাদের চোখ রাঙানো দেখতে চাই না, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়তে হবে।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য প্রদান করেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মাসুম, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী অনুপ কুমার নন্দী, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার রফিকুল আলম টুকু, জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বাবু মানিক কুমার ঘোষ, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোমেন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব। এছাড়া এসময় কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে ১৪ আগস্ট জেলা শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্কন, রচনা সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব সহ অতিথিবৃন্দরা।

আরও পড়ুন: