নিজ সংবাদ ॥ বেকারি পণ্যের নামে আসলে আমরা কি খাচ্ছি? কুষ্টিয়ার বেশিরভাগ বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন শেষ নেই। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণেও রয়েছে চরম অব্যস্থাপনা। এছাড়াও পণ্য রাখার ঘর যেমন অপরিষ্কার। পোকামাকড়েও ভরপুর। সর্বোপরি বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের নেই বিএসটিআই এর লাইসেন্স। আর যে গুলোতে বিএসটিআই এর লাইসেন্স আছে সেগুলোতেও খাদ্যের মান বজায় না রেখেই করা হচ্ছে উৎপাদন। অনুমোদন ছাড়াই বেকারি পণ্যের উৎপাদন এবং বিপরর এখন নিয়মিত বিষয় হয়ে উঠেছে। বেকারি পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতরা কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছেননা বলে অভিযোগ রয়েছে। কুষ্টিয়া পৌরসভার জগতি রেলবাজারের বেবী সুপার মার্কেটে অবিস্থত সুমনা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর কারখানা।
বেকারি পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় লাইসেন্স, যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সনদ, পণ্য ক্রয় চালানের কপি, পেস্ট কন্ট্রোল প্রমাণকসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র নেই প্রতিষ্ঠানটির। ঝুলকালি মাখা প্রতিটি কারখানার ভেতরে-বাইরে নোংড়া কাদা, সেই সাথে ময়লা-আবর্জনা ও দূর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে নানান বেকারী পণ্য। প্রতিষ্ঠানটির পাশেই রয়েছে নর্দমা ও ময়লার স্তুপ। কারখানার ভিতরে মশা-মাছিতে পরিপূর্ণ। এছাড়াও কারখানার ভিতরে রয়েছে একাধিক কাঁচা-পাকা টয়লেটের অবস্থান। কারখানাগুলো স্থাপিত হয়েছে টিনশেড বিল্ডিংয়ে। বহু পুরনো চালার টিনগুলো স্থানে স্থানে ছিদ্র থাকায় বৃষ্টির পানিও অনায়াসেই কারখানার ঘরে ঢুকে। এসবের কারনে সুমনা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। যেখানই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ চলছে ব্রেড, বিস্কুট, কেকসহ নানা লোভনীয় খাদ্য।
উৎপাদন ব্যয় কমাতে এসব বেকারির খাদ্যপণ্যে ভেজাল আটা, ময়দা, ডালডা, তেল, পচা ডিমসহ নিম্নমানের বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগও রয়েছে। কেক ও ব্রেড তৈরির জন্য পেপারমেন্ট, সোডা ও ব্রেকিং পাউডার ব্যবহার করা হচ্ছে। নোংড়া পরিবেশ ও নিন্মমানের দ্রব্য ব্যবহার করে এই বেকারিতে যে পণ্য খাদ্য উৎপাদন করা হচ্ছে তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া এর সিনিয়র কেমিস্ট মো. হাবিবুল বাশার বলেন, সুমনা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী নামের কোন প্রতিষ্ঠানের আছে বলে আমার জানা নেই। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জেলা কার্যালয় এর নিরাপদ খাদ্য অফিসার (অ.দা.) সজিব পাল বলেন, নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে এমন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বিএসটিআই আঞ্চলিক কার্যালয় কুষ্টিয়া’র উপপরিচালক (রসায়ন) ও অফিস প্রধান প্রদীপ কুমার মালো বলেন, আমাদের অফিসাররা যখন এসব বেকারি গুলোতে যায় তখন প্রতিষ্ঠানের পরিবেশগত দিক গুলো দেখে। তাছাড়াও সুমনা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর লাইসেন্স আমাদের কাছে প্রক্রিয়াধীন আছে।
