কুমারখালীতে সাব রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা না থাকায় জনগণের ভোগান্তি, বেকার শতাধিক মানুষ
প্রশিক্ষণের জন্য দুইমাসের ছুটিতে গেছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তা। দলিল লেখকদের সাথে বনিবুনা না হওয়ায় আসেননা অতিরিক্ত দাঁয়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাও। সেজন্য প্রায় ২০ দিন বন্ধ রয়েছে কার্যক্রম।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ভুক্তভোগী জনগণ।

কুমারখালীতে সাব রেজিস্ট্রার কর্মকর্তা না থাকায় জনগণের ভোগান্তি, বেকার শতাধিক মানুষ
পরিবার পরিজন নিয়ে বেকার জীবন-যাপন করছেন দলিল লেখক, তাঁদের সহযোগী, স্ট্যাম্প বিক্রেতাসহ প্রায় শতাধিক মানুষ। এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এতথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের পদচারণায় মুখরিত ব্যতিব্যস্ত থাকা চত্বরটি অনেকটা সুনসান নিরবতা। দলিল লেখক ও তাঁদের সহযোগীরা বেকার বসে আছেন। স্ট্যাম্প বিক্রেতারা ক্রেতার অপেক্ষায় সময় গুণছেন। সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে নেই কর্মকর্তা। নেই ভুক্তভোগীদের লম্বা লাইন। এসময় স্ট্যাম্প বিক্রেতা আশরাফুল আলম বলেন, প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার স্ট্যাম্প বিক্রি হয়। কিন্তু এখন সাহেবও ( রেজিস্ট্রার) নাই, বেচাবিক্রিও নাই। দলিল লেখক মনিরুল ইসলাম বলেন, তিন সপ্তাহ ধরে রেজিস্ট্রী বন্ধ। মানুষ এসে এসে ফিরে যাচ্ছে। প্রায় শতাধিক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। অনেক ভোগান্তি হচ্ছে সকলের।’ কেউ একটা জমি বিক্রি করে আরেকটা কিনবে। কেউ জমি বেচে ছেলে – মেয়ে বিয়ে দিবে। কেউ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবে। সব বন্ধ হয়ে আছে। ‘নাম প্রকাশ না করা শর্তে কথা গুলো বলছিলেন জ্যৈষ্ঠ একজন দলিল লেখক। তাঁর ভাষ্য, অতিরিক্ত দাঁয়িত্বে থাকা সাব-রেজিস্ট্রার কিছু অনৈতিক দাবি করেছেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় দলিল লেখকদের সাথে ঝামেলা করে আর আসেননা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ঘুরতিছি। কিন্তু দলিল লেখক শুধু বলে ‘সাহেব নাই, সাহেব নাই’। এবিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বড় বাবু ( অফিস সহকারী) আতাউল ইসলাম জানান, ২৯ অক্টোরব সাব-রেজিস্ট্রার দুইমাসের ছুটি নিয়ে ঢাকা প্রশিক্ষণে গিয়েছে। ২ নভেম্বর জেলার মিরপুরের সাব-রেজিস্ট্রার অতিরিক্ত হিসেবে দাঁয়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু একদিন এসে তিনিও আর আসেনি। এতে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। তাঁর ভাষ্য, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ টি করে জমি রেজিস্ট্রী হতো। যেখান থেকে প্রতিদিনই পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হতো।
এবিষয়ে জানতে অতিরিক্ত দাঁয়িত্ব প্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিককে মুঠোফোনে বারবার কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কলটি গ্রহণ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। জেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বড় বাবু ইব্রাহিম জানান, কেন অতিরিক্ত দাঁয়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সেখানে যাচ্ছেনা। তা লিখিত জানতে চাওয়া হবে। সমস্যার সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল জানান, তিনি জেলা সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
