বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পরপরই আত্মগোপনে চলে গেছেন কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন- কুমারখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান, কুমারখালী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান অরুণ, সাবেক এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ সহ আরো অনেক নেতারা চলে যান আত্মগোপনে।
কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আওয়ামীলীগ ক্ষমতা ছাড়ার পর বিএনপি ও জামায়াতের নেতা কর্মীরা যে ভাবে বাড়িঘর, অফিস, ব্যবসায়া প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে। লাখ লাখ টাকা ক্ষতি সাধন করছে তারা। আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের উপর আছি। দল যে সিদ্ধান্ত দিবে সেই অনুযায়ী আগাবো। খুব শীঘ্রই আসছি আমরা। এদিকে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন কর্মীরা। হামলার ভয়ে অনেকে রাতে বাড়িতে থাকছেন না।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদকর্মীদের অফিসের হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনা ঘটেছে যে সব জায়গায়, কুমারখালী প্রধান সড়কের অভিজাত বিপণি বিতান সোনালী হস্তশিল্প, গন মোড়ে রাজিবের মোবাইল দোকান, থানা সংলগ্ন সৌরভ কম্পিউটার, স্টেশন বাজারে রমেশ দধি ভান্ডারে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। এই সময় কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক সাংসদ ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এর অফিস, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানের অফিস ভাংচুর ও লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা।
এছাড়া পৌর মেয়রের অফিস ও বাস ভবন ভাংচুর এবং লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। এই সময় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তাজ্জামান নিপুন এর অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়াও পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ হারুনের এলঙ্গীর বাস ভবনে হামলা, লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম রফিকের বাড়ি, ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিলনের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আশাদুর রহমান আশার এলঙ্গী বাস ভবনে হামলা ও লুটপাট চালায় দূর্বৃত্তরা। এঘটনা গত ৫ আগষ্ট বেলা ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত চলে। সেই দিন দূর্বৃত্তরা কুমারখালী থানায় হামলা ও লুটপাটের উদ্দেশ্যে গেলে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ তাদের গতিরোধ করে সরিয়ে দেয়। সেই দিন থানা পুলিশ, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে কোন প্রশাসন না থাকায় কুমারখালীর ব্যবসায়িক, সাধারণ জনগন আতংকে দিনাতিপাত করছে। স্ব স্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্মচারীরা রাত জেগে পাহারা দিতেও দেখা যায়।
কুমারখালী যুবদলের আহ্বায়ক এড্যাভোকেট জাকারিয়া আনছার মিলন বলেন,’আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীরা বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর লুটপাট করেছে। বিএনপি কখনও ভাঙচুর – লুটপাটের রাজনীতি করেনা। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম আকিব বলেন, আমরা এখন থেকে লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ সহ যে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা এড়াতে সর্বদা সজাগ রয়েছি। হামলা -ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের বিষয়ে কেউ মামলা করতে চাইলে থানায় এসে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। যে কোন অপ্রিতিকর ঘটনা রুখতে কুমারখালী থানা পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করছি।
