কুমারখালীতে অমর কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮ তম জন্মোৎসব শুরু - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুমারখালীতে অমর কথাসাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮ তম জন্মোৎসব শুরু

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ১৪, ২০২৫

মিজানুর রহমান নয়ন, কুমারখালী ॥ বাংলা সাহিত্যের অমর কথাসাহিত্যিক ও বিষাদসিন্ধু রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়ায় তাঁর বাস্তুভিটায় দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। কবির বসতভিটায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মঞ্চ নাটকের আয়োজন করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন। বসেছে গ্রামীণ মেলাও।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। সন্ধায় আলোচনা সভার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দিনব্যাপী অন্ষ্ঠুানের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর আলম। সাংস্কৃতিক অন্ষ্ঠুান ও মঞ্চ নাটক অনু্ষ্িঠত হয়। মূখ্য আলোচক ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রাশিদুজ্জামান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মীর মশাররফ হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল।

জানা গেছে, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিন বিকেলে লাঠিখেলা ও আলোচনা শেষে মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাট্যানুষ্ঠান। এদিন মঞ্চায়িত হয় কবির লেখা “ জমিদার দর্পণ “। পরিবেশনা করবেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি নাট্যগোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ। আজ শুক্রবার মধ্যরাতে কবির কালজয়ী উপন্যাস বিষাদ-সিন্ধু অবলম্বনে নাটক “এজিদের পরিণতি” মঞ্চায়িতর মধ্যদিয়ে শেষ হবে জন্মোৎসব। এদিকে জন্মোৎসব ঘিরে বসতে গ্রামীণ মেলা। মিষ্টি, খই, জিলাপিসহ হরেকরকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্যকর্ম রচনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা ও সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। ভারতী, সংবাদ প্রভাকর, মিহির, হাফেজ, আহমদী, নবরত্ন প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত লিখতেন।

ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা ও ফারসি ভাষা রপ্ত করেন তিনি। ধর্ম, আইন, প্রবন্ধ, ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা, নাটক, গান ও উপন্যাস রচনা করেছেন তিনি। এরমধ্যে কোরআন, শাহনামা, গুলিস্তা, কাসাসুল আম্বিয়া, রামায়ন-মহাভারত, বিদ্যাসুন্দর দাশরথী রায়ের পাঁচালী, বানভট্রের কাদম্বরী উল্লেখযোগ্য।

১৮৬৯ সালে লেখা মীর মশাররফ হোসেনের “রত্নবতী” উপন্যাসটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর তাঁর অমর সৃষ্টি ১৮৮৫ সালে লেখা “বিষাদ সিন্ধু” এ ছাড়া উদাসীন পথিকের মনের কথা, রাজিয়া খাতুন, তহমিনা, বাঁধাখাতা, বধূমাতাও উল্লেখ্য। তার রচিত নাটক বসন্ত কুমারী ও জমিদার দর্পণ আমাদের বাংলাসাহিত্যে এক বিশেষ জায়গা দখল করে আছে। ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ তিনি করেন। তার পিতার নাম ছিল মীর মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতার নাম ছিল দৌলতন নেসা। তিনি ১৯১১ সালের ১৯ শে ডিসেম্বর ইন্তেকাল করেন।