বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়া পাবনা ও নাটোর জেলার একমাত্র বৈধ বালি মহাল হচ্ছে লালপুর দিয়ার বাহাদুরপুর বালি মহাল।সরকারি ইজারাকৃত এই বালুমহালটি পরিচালনাকারী মোল্লা ট্রেডার্স এর পার্টনার ইঞ্জিনিয়ার কাকনের বিরুদ্ধে ‘কাকন বাহিনী’ নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন জাতীয় ও লোকাল পেপার পত্রিকায় যে কোন ঘটনা কে কেন্দ্র করে চালানো হচ্ছে ষড়যন্ত্রমূল অপপ্রচার বলে দাবি করেন বৈধ চর মালিক মোল্লা ট্রেডার্স ও বালির নৌকার মাঝিমাল্লা এবং বিভিন্ন ঘাটের বালি ব্যবসায়ীরা। সূত্রে জানা যায়,পাবনা ঈশ্বরদীর বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার সহযোগীরা নদীপথে চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কাজ চালিয়ে আসছিলো।
বিআইডব্লিউটিএ থেকে কুষ্টিয়ার বালি খেকো নামে পরিচিত আবু সাঈদ খান এবং ঈশ্বরদীর সুলতান আহমেদ টনি বিশ্বাসের নামে একটি অবৈধ কাগজকে ব্যবহার করে ঈশ্বরদী এবং কুষ্টিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে যাচ্ছিলেন এই চক্রটি। কিন্তু কিছুদিন পূর্বেই জানা যায় হাইকোর্টের নির্দেশে বিআইডব্লিউটিএ থেকে নেয়া অবৈধ কাগজটি চিরতরে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি ইজারাকৃত বৈধভাবে বালি উত্তোলন হতো যে জায়গা থেকে সেই জায়গায় অবৈধ কাগজ দেখিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করত তারা।
সেই জায়গায় যখন নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে ৯ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকায় ইজারা দেন মোল্লা ট্রেডার্স এর একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে আর বৈধ ইজারা নেওয়ার পর তারা যখন দিয়ার বাহাদুরপুর পদ্মা নদী থেকে বৈধভাবে বালি উত্তোলনের কাজ শুরু করে তখন থেকেই স্থানীয় বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার দুই ভাই মেহেদী ও সোনামণি এবং তাদের সহযোগীরা প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় মোল্লা ট্রেডার্স ও তার পার্টনার বৈধ বালি ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকনের বিরুদ্ধে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। বালু মহাল দখল যেভাবে করে,সেই থেকেই জাকারিয়া পিন্টুর হাতে তৈরি করা অস্ত্রধারী নদীপথের জলদস্য কুখ্যাত সন্ত্রাসী মুনতাজ ও বেলাল বাহিনী সহ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে ছোট নৌকা ও স্পিডবোর্ডের মাধ্যমে নদীপথে বৈধ বালু মহল থেকে বালু নিয়ে আসা বলগেট বালির নৌকায় থাকা মাঝি-মাল্লাদের অবৈধ আগ্নেয় অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদা নিতে শুরু করে এই চক্র।
আর চাঁদা না দিলে তাদেরকে অন্যায় ভাবে অস্ত্র দিয়ে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়া এবং অমানবিক নির্যাতন শুরু করে। বৈধ ইজারাদার বলেন জেলা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সহযোগিতা চাইলে তারা কোন প্রকার তাদেরকে সহযোগিতা করেনি তারা যেন দেখেও না দেখার ভান ধরে থাকতেন। বৈধ বালু ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকন সহ সকলকে উচ্ছেদ করার জন্য বিভিন্ন মিডিয়া দিয়ে তার বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে অপপ্রচার চালানো শুরু করে, নাম দেয়া হয় কাকন বাহিনী।
এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কয়েকবার নিউজের মাধ্যমে প্রতিবাদ করার পরও থামেনি বিভিন্ন মিডিয়ার অপপ্রচার। বালি ব্যবসায়ীরা বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ইঞ্জিনিয়ার কাকনের বালি মহলে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ঈশ্বরদীর বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু কারামুক্ত হওয়ার পরে তার বিশ্বস্ত মুনতাজ ও বেলাল সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নদীতে ত্রাসের রাজত্ব শুরু করে।নদীতে তার সন্ত্রাস বাহিনী দিয়ে নৌকা ও স্পিডবোর্ডের মাধ্যমে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ভিডিও ধারণ করে নিজেরাই এবং বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীকে ভয় ভীতি দেখিয়ে সেই ভিডিও চালিয়ে দেয় বৈধ বালি ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকনের নামে।
কিছুদিন আগে বৈধ বালিরঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে হবির চর নামক স্থানে রাইটার লিটন নামক একজন কসমেটিক ব্যবসায়ী নিজের পৈত্রিক সম্পত্তির জমিতে খড় বা কাশবন বিক্রি করতে গেলে পিন্টুর নদীপথের কুখ্যাত সন্ত্রাসী মুনতাজ ও বেলালসহ বাহিনীর সদস্যদের সাথে তার ব্যাপক কথা কাটাকাটি হয় ।একপর্যায়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক যখম করে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দেয় লিটনকে।ওই দিনে ওই চরে কে বা কাহারা গোলাগুলির ঘটনা ঘটায় এতে করে নদীপথের কুখ্যাত সন্ত্রাসী মুনতাজ বেলাল বাহিনীর প্রধান মুনতাজ সহ কয়জন গুলিবিদ্ধ হয় ও গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন মারা যায়।এতে নাম হয় ও দৌলতপুর থানাতে কাকন বাহিনীদের নামে হত্যা মামলা হয়।
কসমেটিকস ব্যবসায়ী লিটনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পরিবারের লোক তাকে খুঁজাখুঁজি করতে থাকে। পরের দিন লিটনের পরিবার খবর পায় লিটনকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে কুখ্যাত সন্ত্রাসী মুনতাজ ও বেলালসহ বাহিনীর সদস্যরা। পরে নৌ পুলিশ খবর পেয়ে লিটনের লাশটি দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর মধ্যে, চৌদ্দহাজার মৌজা এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পরের দিন পিন্টুর সহযোগিতায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী জলদস্যু মুনতাজ ও বেলাল বাহিনীর দুইজন নিহতের ঘটনায় কুষ্টিয়া দৌলতপুর থানায় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বৈধ ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার কাকনকে প্রধান আসামী এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ ব্যবসায়িক সহ মোট ২৩ জন ও অজ্ঞাত আরও ৩০ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
অপরদিকে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত লিটনের বড় ভাই আলী হোসেন বাদী হয়ে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু, তার ভাই মেহেদী হাসান, বিল্লাল মন্ডল, সুলতান আহমেদ টনি বিশ্বাস সহ কয়েকজনের নামে একটি হত্যা মামলার দায়েরের জন্য এজাহার জমা দিয়েছে প্রদান করে, এ মর্মে দৌলতপুর থানাতে লিটনের পরিবার থেকে ১৫ জনের বিরুদ্ধে এজাহারভুক্ত ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা করে হত্যা মামলা করেছে। তবে মোল্লা ট্রেডার্স এর মালিক বলেন,আমাদের বৈধবালি মহলটি দখলে নেয়ার জন্য বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার সহযোগীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থের বিনিময়ে মামলায় ফাঁসানো ও বিভিন্ন মিডিয়া পেপার পত্রিকা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার কাকন নামটি অপব্যবহার করে কাকন বাহিনী নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।বলে দাবি ইজারাদারের এই অপপ্রচার ও মিথ্যা মামলায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
