কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি-বাঁশগ্রাম সড়কের কাঁচিকাটা সেতু, ভাদুরমোড় থেকে আদাবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের অন্তত ৫৪টি গাছ রাতের আধারে কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রায় ৩০-৪০ বছর বয়সি ১০-১২ লাখ টাকা মূল্যের মেহগুনি ও শিশু গাছ গুলো গেল এক মাস ধরে কাটা চলছে। তবে এত গুলো গাছ কাটা হলেও জানেনা প্রশাসন। স্থানীয়দের ভাষ্য, একটি চক্র রাতের আধারে প্রতিদিনই বড় বড় গাছ গুলো কেটে নিচ্ছে। গত বুধবার রাতেও ভাদুরমোড় এলাকা থেকে প্রায় লাখ টাকা মূল্যের দুইটি বড় মেহগুনি গাছ কাটা হয়েছে। আরো কয়েক শত গাছ কাটার অপেক্ষায়।
‘৯৯৯’ কল দিলেও আসেনা পুলিশ। এতে চরম ক্ষুব্ধ তারা। গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কাঁচিকাটা সেতু থেকে আদাবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে কয়েক শত বড় বড় মেহগুনি, শিশু, বাবলাসহ হরেকরকম গাছ। সেখানে প্রায় অর্ধশত গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। পড়ে আছে গাছের গোড়া ও কিছু ডালপালা। তবে এবিষয়ে ভয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি প্রতিবেদকের সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজ ছাত্র বলেন, প্রায় এক মাস ধরে রাতের আধারে একটি চক্র সকড়ের গাছ গুলো কেটে নিচ্ছে। ‘৯৯৯’ এ কল দিলেও পুলিশ আসেনা। তাঁর ভাষ্য, ৫ আগষ্টের পরে পুলিশের তৎপরতা নেই। ফলে অবাধে অপরাধ চালাচ্ছে চক্রটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাঠ মিস্ত্রি বলেন, গেল দুই-তিন দিনে একটি চক্র প্রায় ছয় লাখ টাকা মূল্যের গাছ কেটে স্থানীয় একটি ‘স’ মিলে চিড়াই করে তা অন্যত্রে নেওয়া হয়েছে। আবার সেখানেই খাট বানিয়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে চক্রটি। তাঁর ভাষ্য, গেল একমাসে সড়কের প্রায় ৫৪ টি গাছ কাটা হয়েছে।
প্রতিটি গাছের মূল্য ২৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত। অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটি চক্র ডিজিটাল করাত দিয়ে রাতের আধারে গাছ কেটে চাঁদুপুর ইউনিয়নের ভাদুরমোড় এলাকার নাসির শেখের (৫০) ‘স’ মিলে চিড়াই করে অন্যত্রে নেওয়া হচ্ছে। কখনও আবার সেখানেই আসবাবপত্র তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। আর গাছের ডালপালা গুলো বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। নাসির ওই এলাকার মনব্বর শেখে ছেলে। বিকেলে সরেজমিন নাসির শেখের ‘স’ মিলে গেলে প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় নাসিরসহ শ্রমিকরা। পরে নাসিরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। গাছ কাটার খবর জানা নেই বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, গাছ কাটার খবর কেউ জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
