কুষ্টিয়া শহরের আগরওয়ালা রোডের কোটপাড়া র্যাব গলিতে অবস্থিত সেভ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল সার্ভিস নামক একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত শিশুর নাম জারিফ, বয়স ৪ বছর। সে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার দর্লবপুর গ্রামের জুয়েল রানার ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, নিউমোনিয়া নিয়ে শিশুটিকে চার দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর থেকে তার শারীরিক অবস্থা মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। তবে গতকাল (ঘটনার দিন) সকাল থেকে চিকিৎসার নামে শুরু হয় একের পর এক ভুল পদ্ধতি। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, শিশুটির শরীরে ৯ বার বা তারও বেশি বার ক্যানোলা করার চেষ্টা করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, এক পর্যায়ে শিশুটির পায়ে ক্যানোলা স্থাপন করেন ডা. জহুরুল। তিনি জানান, একটি সাধারণ স্যালাইন পুশ করে পরীক্ষা করতে চান ক্যানোলা ঠিকঠাক কাজ করছে কি না। এরপর থেকেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ঘটনার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. জহুরুল পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
একই হাসপাতালের আরও এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন,
“আমার রোগীসহ অন্যান্যরা সকাল ৭টা থেকে অপারেশনের জন্য না খেয়ে অপেক্ষায় ছিল। প্রথমে দুপুর ২টার সময় অপারেশনের সিরিয়াল দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা মিস হয়ে যায়। পরে রাত ৮টার সময় নতুন সময় দেওয়া হলেও সেটিও বাস্তবায়িত হয়নি। শেষে গভীর রাতে, রাত ২টার দিকে, ডা. শাফায়াত মোহাম্মদ শান্তনু অপারেশন করেন।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “একজন রোগীকে সারাদিন না খাইয়ে রেখে অপারেশন করানো হলো। আমার রোগীর কিছু হয়ে গেলে এর দায়ভার কে নিতো? আমার স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ সবাই না খেয়ে ছিল। এই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের রোগীদের প্রতি কোন দায়িত্ববোধ নেই। এদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে আর কেউ চিকিৎসার নামে হয়রানি না করতে পারে।”
ঘটনাটি নিয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার তদন্ত ওসি’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান:
“এ বিষয়ে আমি এখনো কিছু জানি না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সেভ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল সার্ভিসে চিকিৎসাসেবা নিয়ে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একটি শিশুর প্রাণহানির মতো ঘটনা এবং অপারেশন ব্যবস্থাপনার চরম অব্যবস্থাপনা জনমনে প্রশ্ন তুলেছে। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বরত চিকিৎসকদের কার্যক্রম তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা ও সচেতন নাগরিকরা।
