মোশারফ হোসেন ॥ চোর চক্র বেছে নিয়েছে এক ভিন্ন পন্থা। চুরি হওয়া বিদ্যুতের মিটার ফেরত দিতে চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে যায় চোর চক্র। চিরকুটে ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন’ লেখা থাকছে এমনি।কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলায় নির্দিষ্ট টাকা দিলেই মিলছে চুরি যাওয়া মিটার।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন তিন প্রতিষ্ঠানের মিটার চুরির খবর পাওয়া গেছে। শুধু চুরিই নয় মিটার ফেরত পেতে উল্টো মালিকের কাছেই চিরকুট লিখে টাকা দাবি করছে চোরের দল। এসব ঘটনায় জড়িতরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
গত বৃহস্পতিবার(১১ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের পৃথক কয়েকটি স্থানে এসব চুরির ঘটনা ঘটে। কুমারখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।যদুবয়রা গ্রামের আব্দুল জলিল স’মিল, একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম স’মিল,আব্দুল রাজ্জাক এর রাইস মিল হতে এর মিটার গুলো চুরি হয়।আব্দুল জলিল জানান, তার ও আশপাশের মিলে এক রাতেই তিনটি মিটার চুরি গেছে।
চোর চক্র বৈদ্যুতিক মিটারগুলো চুরির পর চিরকুটে একটি মোবাইল নম্বর রেখে যায়। মিটারের গ্রাহকেরা ওই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলে তাদের কাছে প্রতিটি মিটারের দাম পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এ টাকা ওই নম্বরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়। আর টাকা না দিয়ে মিটার লাগালে আবারও মিটার চুরির হুমকি দেওয়া হচ্ছে।আব্দুল রাজ্জাক জানান, স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে জানানো হয়েছে।
মিটার চুরির ঘটনার অভিযোগ করা হলেও চোর গ্রেপ্তার হচ্ছে না। এতে বৈদ্যুতিক মিটার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা। এতে গ্রাহকদের টাকা ও হয়রানি দুটোই হতে হচ্ছে।শহিদুল ইসলাম জানান, এভাবে বৈদ্যুতিক মিটার হারিয়ে টাকা দিয়ে মিটার নেওয়ার পর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে খরচ দিয়ে মিটার লাগানোসহ বিভিন্ন হয়রানিতে ক্ষুদ্ধ ও হতাশাগ্রস্ত তার মতো অন্যান্য ভুক্তভোগীরাও।
জেলায় বৈদ্যুতিক মিটার চোর চক্রের হোতাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে জরুরিভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এই গ্রাহকের।পল্লী বিদ্যুতের মিটার চুরি করে কৃষক ও ব্যাবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা আদায় করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। এতেকরে ব্যাবসায়ী ও কৃষকরা চোর চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।এমনি ভাবে চাঁদা আদায়ের পর সেই মিটার আবার মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চালের মিল, স’মিল, ইটভাটা কিংবা গভীর নলকূপ, যেখানে বিদ্যুৎ বেশি লাগে সেখানে ব্যবহার করা হয় থ্রি ফেজ মিটার।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অভিনব কায়দায় এসব মিটার চুরির হিড়িক পড়েছে। এই অঞ্চলে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে অন্তত ২০ টি শিল্প মিটার চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা।যদুবয়রা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোঃ আজাদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং চোর চক্রের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছি। তারা আমাকেও হুমকি ধামকি দিয়েছে।
এই বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আনছার উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আমরা শুনেছি, আমরা গ্রাহকদের পরামর্শ দিয়েছি পুলিশ ও র্যাবের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করার জন্য। তিনি আরও বলেন, চোরচক্র এই কাজগুলো করছে, সবাইকে একটু সজাগ থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
