কুষ্টিয়ায় ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বেড়েছে কাঠের গুড়ির চাহিদা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

কুষ্টিয়ায় ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে বেড়েছে কাঠের গুড়ির চাহিদা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জুন ১৬, ২০২৪

নিজ সংবাদ ॥ প্রাচীন বা সেকেলে জিনিস দেখতে এখন জাদুঘরে যেতে হয়। কিন্তু ঐতিহ্য ধরে রেখেছে কাঠের গুড়ি। যা মানুষ সেই প্রাচীণকাল থেকে ব্যবহার করে আসছে মাংস কাটার কাজে। আজও সমানভাবে রয়েছে তার জনপ্রিয়তা। ঈদ এলেই সারাদেশের আনাচে-কানাচে এই জিনিসটির কদর বিপুল পরিমাণে বেড়ে যায়।

ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানী। আর এই কোরবানীর পশু জবাইয়ের পর মাংস প্রক্রিয়াকরণের কয়েকটি খুবই প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই মাংস কেটে টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত এই কাঠের পাটাতনটি। সারা বছর কসাইখানাতে এটির ব্যবহার খুবই সাধারণ হলেও জিনিসটি অসাধারণ চাহিদায় এসে ধরা দেয় ঈদুল আজহার এইদিনে। 

ঈদুল আজহার আর মাত্র দুইদিন বাকি এরই মধ্যে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন হাট-বাজারে কোরবানির পশুর মাংস কাটার জন্য গাছের গুঁড়ির চাহিদা বেড়েছে। হাটে-বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাংস কাটার অন্যতম এই সরঞ্জাম। বর্তমানে প্রকারভেদে ৩শ থেকে ৪শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই গুঁড়ি।

ঈদুল আজহার (কোরবানি) আসলে আলাদা ভাবে কদর বেড়ে যায় এই গাছের গুঁড়ির। এটি তৈরিতে তেঁতুল গাছের কাঠকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ অন্য কাঠের তুলনায় তেঁতুল কাঠের গুড়ি দা-ছুরির আঘাতে নষ্ট হয় না। তাই তেঁতুল গাছের গুড়ির চাহিদা ব্যাপক। গুড়ি সব কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না, এটি তৈরি করতে হয় এমন কাঠ দিয়ে, যাতে চাপাতির (মাংস কাটার যন্ত্র) কোপে কাঠের গুড়া না ওঠে। কোরবানির মাংস কাটার জন্য তৈরি করা এসব গুড়ি অধিকাংশই তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি। এলাকাভেদে এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। কোন এলাকায় এটাকে বলে খাইট্রা, খটিয়া, কাইটে, গুড়ি, শপার, হাইজ্যা প্রভৃতি।

তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে গুড়ি বানানোর কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী আবদুর রহমান বলেন, তেঁতুল কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসবে না। তাই কাঠের গুড়াও উঠবে না। ফলে মাংস নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। গত কযেকদিন ধরে কুষ্টিয়ার বড় বাজার, রাজারহাট, বজলুরমোড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এই কাঠের গুঁড়ি বিক্রি হতে দেখা যায়।

কাঠের গুড়ি ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান বলেন, সব জিনিসের দাম বাড়ায় কাঠের দামও বেড়েছে। বিশেষ করে কোরবানি ঈদ এলে তেঁতুল ও বেলের গাছের কাঠের দাম বাড়ে। যার কারণে এবারে বেল ও তেঁতুল গাছের কাঠের গুড়ির দাম বেড়েছে। গত বছর যে গুড়ি ২৫০ টাকায় বিক্রি করেছি সেটা এবারে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছি। উপায় নাই, কেনা বেশি বিক্রিও বেশি দামে।

কুষ্টিয়া মিলপাড়া এলাকার রাফি শরিফ বলেন, কোরবানির ঈদের আগে পশু জবাই ও মাংস তৈরির উপকরণ হিসেবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও গাছের গুড়ি কিনতে হয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মৌসুমি এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা।

তিনি আরো বলেন, ঈদের নামাজ পড়ে পশু কোরবানি দেওয়ার পর গোস্ত ও হাড় কাটতে এসব কাঠের গুড়ি লাগে। তখন খোঁজাখুঁজি করা বা অন্যের কাছ থেকে নেওয়া অনেকটা বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়ায়। তাই কিনতে এসেছি।