রোগীতে ঠাসা কুমারখালী হাসপাতাল - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

রোগীতে ঠাসা কুমারখালী হাসপাতাল 

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: এপ্রিল ৩০, ২০২৪

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ সাজেদা খাতুন ৮ মাসের জমজ বাচ্চার নিয়ে তিন দিন আগে আসেন কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়ার সাথে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি আছেন শিশু ওয়ার্ডে। অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে প্রচন্ড গরম আর হাসপাতালের গাদাগাদি পরিবেশে খুব কষ্টে আছেন বলে জানান। সাজেদা খাতুনের মত একই অবস্থা কৃষক আব্দুল মালেকের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ঠায় হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে। প্রচন্ড গরমে ধান কাটতে গিয়ে এ রোগে আক্রান্ত হন তিনি। দেড় সপ্তাহ জুড়ে চলমান তাপদাহে গরম জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতলে ভর্তি রয়েছে সাজেদা কিংবা মালেকের মত দেড় শতাধিক মানুষ। গত রবিবার উপজেলার তাপমাত্রা ৪১.৫ক্ক ডিগ্রী। প্রায় প্রতিদিন ই তাপমাত্রার পারদের উর্ধ্বগতি রেকর্ড ছাড়াচ্ছে। এতে নিয়মিত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। যা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বাড়তি রোগীর চাপে তিল ধারনের জায়গা নেই । প্রতি ঘন্টায় গড়ে সাড়ে ১১ জন অনুপাতে ৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় ১৪০ জন রোগী। ঘন্টায় ঘন্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছে এ সংখ্যা। এতে বেড ছাপিয়ে মেঝেতেও জায়গা না পাওয়ায় ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনেরা। বড়দের পাশাপাশি বেশি আক্রান্ত বৃদ্ধ ও শিশুরা। জ্বর, সর্দি ,কাশি ,নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীতে ঠাসা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড। তীব্রগরমের ক্রমাগত উর্ধগতিতে হিট স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এদিকে ক্রমাবর্ধমান রোগীর এ চাপ সামলাতে নাজেহাল হাসপাতালের ডাক্তার ও সেবিকারা। ৮৬ বছরের বৃদ্ধা মো. মনির উদ্দীন জানান, দীর্ঘদিন ধরে নিউমোনিয়ায় ভুগছি। এই গরমে ঘাম হওয়ায় ঠান্ডা বেড়ে নিউমোনিয়ার মাত্রা বেশি হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে ভর্তি হয়েছি। হাসপাতালে ফ্যান ও অন্যান্য সেবা না পাওয়ার কথাও জানান তিনি।  সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ধারণ ক্ষমতার প্রায় আড়াই গুণ। এক বেডে একাধিক রোগী গাদাগাদি করে আছে। এতেও ঠাঁই না হওয়ায় বেশির  ভাগের জায়গা হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে। পর্যাপ্ত ফ্যান না থাকায় গরমে অতিষ্ঠ বেশিরভাগ রোগী। গরম থেকে বাঁচতে নিজ বাসা বাড়ি থেকে ফ্যান নিয়ে এসেছেন অনেকে। এছাড়াও রয়েছে বাথরুম গুলোর  দুর্গন্ধময় নোংরা স্যাতসেতে পরিবেশ যা রোগীদেরকে আরো দুর্বিসহ করে তুলেছে। এ বিষয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স মোছাঃ শারমিন খাতুন বলেন, গরমের কারণে হাসপাতালে ডায়রিয়া,এজমা ও হিট স্ট্রোক জনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। আমরা রোগীদেরকে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ ও দিচ্ছি। যাতে তারা সুস্থ থাকার পাশাপাশি পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকে। হাসপাতালের আরএমও ডাঃ এস এম সাঈদ সাকিব লোকবলসহ অন্যান্য সমস্যার কথা স্বীকার করে  বলেন,  ঈদের সময় সর্বোচ্চ ৭০ জন  রোগী ভর্তি হলেও বর্তমানে এর সংখ্যা প্রায় ডাবল। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। পযাপ্ত তরল খাবার গ্রহণ, ছাতা ব্যবহার সহ সাবধানে চলাফেরার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এরাতে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪ পর্যন্ত রোদে না যাওয়ার ও পরামর্শ দেন তিনি।