জানেন না জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা কুষ্টিয়ায় পুলিশের সদস্যের বিরুদ্ধে থানার ভিতর মারপিট সহ বিস্তর অভিযোগ - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

জানেন না জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা কুষ্টিয়ায় পুলিশের সদস্যের বিরুদ্ধে থানার ভিতর মারপিট সহ বিস্তর অভিযোগ

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪

নিজ সংবাদ \\ কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জোরপূর্বক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া সহ অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় ধরে এনে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের লোক হাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননা কেউ। তবে ধীরে ধীরে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগীদের অনেকেই। এদিকে গতকাল বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া মডেল থানার দুই এস আই এর বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওষুধ ব্যবসায়ী আল আমিন। অভিযুক্তরা হলেন, কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই শাহীন এবং মিলপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আসাদ। এছাড়াও এস আই লিটনের অত্যাচারে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সোহেল রানা নামের অপর যুবক। পুলিশ সুপার বরাবর ভুক্তভোগী আল আমিনের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে চলমান বাড়ীর জমি জমা সংক্রান্ত মামলার রায় তাদের পক্ষে হয়। যার ফলে ঐ মামলার বিবাদী কুমারখালী উপজেলার সাঁওতা গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে আব্দুর রশিদের পরামর্শে গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই এবং মিলপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আসাদ তার লাহিনী বটতলায় অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল-আমিন ফার্মেসীতে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করে এবং দোকানের শার্টার বন্ধ করে দেয়। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, অভিযোগকারী আল আমিন তার অপরাধ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঐ দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে মারতে উদ্যত হয় এবং দোকান না খোলার নির্দেশ দেন। এদিকে ঐ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এস আই শাহীন এবং এস আই আসাদ পুলিশের পোশাক ছাড়াই আল আমিনের ফার্মেসীর দোকানে গিয়ে তাকে গালাগালিজ করা সহ তাকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাকে দোকানের মধ্যে বন্ধ করে রাখে। জানতে চাইলে ওষুধ ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, আমার মা মাতালি তুলে গালাগালিজ কেন করা হলো এবং আমার দোকান কেন বন্ধ করা হলো ? আমি বিচার চাই। অপর দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার রাজারহাট বিহারী পাড়ার কবির হোসেনের পুত্র সোহেল রানার  বোনদের সাথে পারিবারিক জমাজমি নিয়ে দ্ব›েদ্বর কারণে তারা বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ করেন। সেই কারণে গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই লিটন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বাড়ী থেকে সোহেল রানাকে মডেল থানায় নিয়ে আসে। এরপর মডেল থানায় তাকে নির্মম শারিরীক নির্যাতন করে এস আই লিটন। পরবর্তিতে গতকাল বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে তাকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে মডেল থানা পুলিশ। আদালতে প্রেরণের আগ পর্যন্ত রাতে তাকে এস আই লিটন দফায় দাফায় নির্যাতন করে বলে জানান সোহেল রানা । সেই মামলায় গতকালই জামিন নিয়ে সোহেল বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের ১০ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সরেজমিনে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তার মুখের বামপাশে এবং পশ্চাৎ এ অসংখ্য মারের দাগ। মারের আঘাতে তার পশ্চাৎ এর পুরোটাই কালশিরা পড়ে রক্ত জমাটবদ্ধ হয়ে রয়েছে। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী সোহেল রানা বলেন, আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে দুই হাত উপরে তুলে এস আই লিটন সহ আপর পুলিশ সদস্যরা বেদম মারধর করে। আমি এর বিচার চাই। সোহেল রানার স্ত্রী তহমিনা জানান, পুলিশ বাসা থেকে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই রিমান্ডে নিয়ে আমার স্বামীকে মারধর করেছে। আমি এর বিচার চাই। ঘটনার বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই শাহীন মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এস আই আসাদ বলেন, আপনি যদি আমার গালির শব্দ শুনতে পান একটা কাট করে আমারে পাঠান। সিসিটিভি’র ফুটেজ আছে মর্মে জানালে তিনি বলেন, আমি ঐ জায়গায় গিছি বলেই তো সিসিটিভি ফুটেজ আপনি পাইছেন। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া মডেল থানার এস আই লিটন রাগান্বিত কন্ঠে বলেন, এই বিষয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে থানায় এসে ওসি সাহেব আছে তার সাথে কথা বলেন। সোহেল রানার  বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, কারে পিটাইছে এটা আমি জানিনা এবং লাহিনী বটতলার আল আমিনের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐখানে কোর্টের অর্ডার ছিলো ঐ জায়গায় দ্বিতীয় পক্ষ যাবে না। তার কোর্টের অর্ডার ভায়োলেট করে, আমাদের কথা না শুনে কাজ করতেছে। ঐখানে গিয়ে হয়তো তারা তার সাথে কোন কথা বলছে। গালাগালির বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, গালাগালিজ করছে কিনা, উচ্চ বাচ্য কথা বললেই তো গালাগালি হয় না। এরপর তিনি রাগান্বিত কন্ঠে প্রতিবেদককে বলেন, আপনি কি করবেন, করেন তো ভাই। এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অ্যাপস্) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, এই ব্যাপারে কি বলবো, আপনি বলছেন, আমি শুনেছি। আগে জেনে নেই। এই বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব বলেন, আপনি বললেন, আমি খবর নেবো।