কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা
কুষ্টিয়া জেলা মুক্ত দিবস যথাযথভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার ১১ই ডিসেম্বর সকাল ৯ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভে বীর শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পন, ফাতেহা পাঠ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্নার মাগফিরত কামনায় দোয়া করা হয়।

কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা
পরবর্তীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ভাস্কর্যের বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা এবং পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। পরবর্তীতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী কালেক্টরেট চত্বর প্রদক্ষিন করে। এরপর সকাল ১০ টায় কালেক্টরেট চত্বরের বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশ গ্রহনে উক্ত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি ও বিজ্ঞ আইনজীবি আ স ম আখাতরুজ্জামান মাসুম, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব সহ কুষ্টিয়া জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
আলোচনা সভায় পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব বলেন, উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমি অন্তরের অন্তর স্থল থেকে শ্রদ্ধা জানাই। আমাদের পরম সৌভাগ্য যে অবিভাবক হিসাবে এখনও আপনারা আমাদের মাঝে উপস্থিত আছেন। কুষ্টিয়াতে অক্ষরিকভাবে যুদ্ধ হয়েছিলো।
কুষ্টিয়ার মানুষের উপর আক্রমন করা হয়েছিলো। সারা দেশের মানুষ যখন নিজেদের রক্ষা করার জন্য ব্যস্ত ছিলো সেই সময় কুষ্টিয়ার মানুষ প্রতিপক্ষের উপর আক্রমণ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলো। মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ার মানুষের অবদান ভূলবার নয়।
জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা আলোচনা সভায় আলোচনা কালে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সারা বাংলাদেশের সকল জেলা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা অংশ গ্রহণ করেছিলো। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কুষ্টিয়ার প্রেক্ষপট একটু ভিন্ন ছিলো। প্রকৃত, আধুনিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম যারা অপ্রতিরোধ্য বাধা তৈরি করেছিলো তারা হলেন কুষ্টিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং পকিস্থান সেনাবাহিনী সবচেয়ে বেশী সৈন্য হারিয়েছে কুষ্টিয়াতে। এই দিক থেকে কুষ্টিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বেশি শ্রদ্ধার দাবিদার। ১ এপ্রিল কুষ্টিয়া মুক্ত করার পরে যখন ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন হয় তখন তারা আবার অতর্কিত হামলা চালিয়ে কুষ্টিয়া দখল করে। সেই সময় অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণ দিতে হয়েছে, অসংখ্য মা-বোনদের সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে। পরবর্তিতে অনেক সাধনার মাধ্যমে কুষ্টিয়াকে পুনরায় মুক্ত করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এবং আন্তরিক শ্রদ্ধাভরে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই যে অবদান, জীবণের বিনিময়ে এই যে আত্নত্যাগ তার ঋণ কোন দিন শোধ হবার নয়। জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা আরো বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রাধান মন্ত্রীর যে অবদান তার মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার ৬টি উপজেলায় ১৯৯টি বীর নিবাস বীর মুক্তিযোদ্ধের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও ৮০টি বীর নিবাসের কাজ চলমান রয়েছে। আমরা আশা করি এই ধারা অব্যহত থাকবে।
