- কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ৮, ২০২৫

কুষ্টিয়ায় মা ও শিশুর লাশ উদ্ধার 

 

দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বসতঘর থেকে এক নারী ও তাঁর আড়াই বছর বয়সী কন্যাশিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ইনসাফনগর গ্রামের বসতঘরে তাঁদের লাশ পাওয়া যায়। পরে রাতে পুলিশ গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মারা যাওয়া রেশমা খাতুন (২৫) ওই গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী রহিদুল ইসলামের স্ত্রী। আর লামিয়া খাতুন (আড়াই বছর) তাঁদের একমাত্র সন্তান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে রহিদুল ইসলাম প্রবাসী হন। শিশু লামিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। অর্থাভাবে তার সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না মা রেশমা খাতুন। প্রবাসী স্বামী রহিদুল ইসলাম নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন না এবং সংসারের খরচ দিতেন না বলে পারিবারিক কলহ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, আর্থিক সংকট ও অশান্তিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েই রেশমা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বলেন, শিশু সন্তানকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছেন। সন্ধ্যায় বিষয়টি জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করেছে। 

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাসহ শিশুর লাশ পুলিশ গিয়ে শোয়ানো অবস্থায় পেয়েছে। লাশের পাশে বসে স্বজনেরা কাঁদছিলেন। ঘটনাস্থলে আমি গিয়েছিলাম। ওই নারীর ছোট ভাই মাঠ থেকে কাজ করে বাড়ি ফিরে বোনের ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। এরপর প্রতিবেশীদের সহায়তায় দরজা ভেঙে দুটি লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। স্বজন, প্রতিবেশী ও লাশের সুরতহালসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে ধারণা করা হয়েছে, শিশুকে হত্যার পর মা নিজেই আত্মহত্যা করেছেন।’ দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, ওই নারীর তৃতীয় স্বামী রহিদুল।

শিশুটি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। এমনকি ওই নারীও অসুস্থ। শিশুটির গলায় মায়ের ওড়না প্যাঁচানো ছিল। আর মায়ের গলায় গামছা ছিল। হতাশা থেকে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি হত্যা মামলা করা হবে। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোলাইমান শেখ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আর্থিক সংকট, শিশুর অসুস্থতা ও পারিবারিক অশান্তি থেকে হতাশ হয়ে রেশমা খাতুন তাঁর শিশুকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন। রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।