৯ বছর ধরে পড়ে আছে কোটি টাকায় নির্মিত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

৯ বছর ধরে পড়ে আছে কোটি টাকায় নির্মিত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রায় কোটি টাকায় নির্মিত কুষ্টিয়ার আমবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পড়ে আছে ৯ বছর ধরে। নির্মাণের পর একদিনের জন্যও হয়নি দাপ্তরিক কার্যক্রম, খোলা হয়নি ভবনের তালা। জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান প্রভাব খাটিয়ে জনবসতিহীন ও অপরাধপ্রবণ এলাকায় ভবনটি নির্মাণ করান। ব্যবহার না হওয়ায় ভবনটি এখন গরু ছাগলের আশ্রয়স্থল আর মাদকসেবীদের আখড়া। কুষ্টিয়ায় আমবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণে অর্থ বরাদ্দের আবেদন হয় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে। অভিযোগ আছে, সে সময়ের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বারী টুটুল নিজ গ্রামে ভবন নির্মাণের জমি কেনান।

এলাকাটি অপরাধপ্রবণ ও কম জনবসতির হওয়ায় ইউপি ভবনের জন্য উপযুক্ত নয়, এমন দাবি করে সেখানে অফিস করেননি পরবর্তী চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মিলন। নির্মাণে অনিয়ম থাকায় স্যুয়ারেজ লাইন, ফিটিংসসহ বিভিন্ন সুবিধায় ঘাটতি আছে বলে দাবি করেন তিনি। চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মিলন বলেন, ভবনের যে পাটাতনগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো বৃষ্টি হওয়ার পরে দেড় দুই ইঞ্চি বসে গেছে এবং ফাঁকা হয়ে গেছে। আমরা বারবার অভিযোগ দেওয়া পরেও এগুলো মেরামত করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে ওই সময়ে আমরা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। গত ৯ বছরে একদিনের জন্যও ভবনটি ব্যবহার না হওয়ায় চুরি হয়ে গেছে নানা যন্ত্রাংশ। খুলে পড়েছে ছাদের টালি। প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি এখন মাদকসেবীদের আখড়া। স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এই ভবনটি এখন অন্য কোনো কাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না।

আরেক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের মতো একটা ভবন লোকালয়ে থাকলে কেমন হয় আর একদম দুর্গম জায়গায় হলে কেমন হয় আপনারাই বলেন!’ এলজিইডির দাবি, কারো প্রভাবে নয়, সব নিয়ম মেনেই ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মান হয়েছে। এ বিষয়ে অনিয়মের কোনো সুদৃষ্টি অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। কুষ্টিয়া মিরপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী জহীর মেহেদী হাসান বলেন, ‘সরকার হয়তো সেসময় মনে করেছিল ওইখানে নির্মাণ হলে কাজ ভালো হবে, সবাই সেবা নিতে পারবে, যেহেতু পাকা রাস্তার সাথে, সে জন্য হয়তো নির্মাণ করেছে।

এইটাতে যোগসাজসের কোনো সুযোগ নেই, কারণ ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা তো লিখিত না হলে নির্মাণ করা যাবে না।’ মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ওই সময়ের ইতিহাসটা পর্যালোচনা করে এবং বর্তমানে এটা কেন এমন হলো এ বিষয়টি আমরা এখন খতিয়ে দেখব। এ নিয়ে সম্ভব হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ নতুন ভবন পড়ে থাকায় পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনেই সেবা নিতে হচ্ছে আমবাড়ীয়া ইউনিয়নের ১৩ হাজার বাসিন্দার।