হানিফের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারেন মেয়র পুত্র তনু
আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মাহবুবউল আলম হানিফের কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে এবার বেশ প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। গত ২টি সংসদ নির্বাচনে হানিফের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও এবার প্রার্থী হয়েছেন কুষ্টিয়া পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র আনোয়ার আলীর পুত্র পারভেজ আনোয়ার তনু।

হানিফের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারেন মেয়র পুত্র তনু
বিষয়টি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। তনু ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী। তরুনদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আছে। নেতা-কর্মিরা মনে করছেন, তনু প্রার্থী হওয়ায় এখানে হিসেব বদলে যেতে পারে। কারণ, ২০১৮ সালে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী দিলেও সেই প্রার্থী মাঠেই নামতে পারেনি। হামলা-মামলায় আক্রান্ত হয়ে ঘরে বসে থাকতে হয়েছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনএফ’র দুর্বল প্রার্থী ছিল নৌকার প্রতিপক্ষ। সেই তুলনায় তনু শক্ত প্রার্থী বলে মনে করছেন অনেকে। তনুর বাবা আনোয়ার আলী কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫ বারের নির্বাচিত মেয়র। তিনি এ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সামান্য ভোটে পারিজত হন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার আলী এখনো দলের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। পৌর এলাকায় তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। তার ছেলে হিসেবে যুব নেতা পারভেজ আনোয়ার তনু প্রার্থী হলে একটু বাড়তি সুবিধা পাবেন।
এছাড়া ভেতরে ভেতরে আনোয়ার আলীর সাথে হানিফসহ তার অনুগতদের বিরোধ আছে। সর্বশেষ পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর কার্যালয়ে হামলা ও তছনছ করা হয় রাতের আধারে। চুরি যায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাগজপত্র। এ নিয়েও আনোয়ার আলী ক্ষুব্ধ হন। অন্যদিকে টানা দুবারের সাংসদ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এলাকায় তথা কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন, যা অন্য কারো সময় হয়নি। তবে নেতাকর্মীদের অভিযোগ, হানিফের আমলে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ ছিল তার চাচাতো ভাই সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার। তিনি দলের ত্যাগীদের কোনঠাসা করে বিএনপি-জমায়াত ও হাইব্রীড নেতাদের কাছে টেনে নেন।
এ কারনে শহর ও ইউনিয়নে দলটির অনেক নেতাকর্মির কষ্ট আছে। তবে হানিফ দলের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় প্রকাশ্যে কেউ বিরোধীতা না করলেও এর প্রভাব পড়তে পারে ভোটের মাঠে এমনটি মনে করছেন দলের প্রবীণ নেতারা। এতে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন পারভেজ আনোয়ার তনু। পারভেজ আনোয়ার তনু বলেন, ‘আমার পরিবার রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর সাথেও রাজনীতি করেছেন। তিনি পৌরসভায় দীর্র্ঘদিন মেয়র আছেন। সদর আসন থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছি। সাধারন জনগন আমাকে ভোট দিবে বলে আশা করছি। সবার কাছে দোয়া চাই। একই সাথে বলেন, সদরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, আরো উন্নয়ন করার সুযোগ আছে। সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাই। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকব।’ এদিকে আওয়ামী লীগের আনোয়ার আলী পন্থি নেতা-কর্মিরা ঐক্যবদ্ধ হওয়া শুরু করেছে। গত দুটি নির্বাচনে তনুর পিতা আনোয়ার আলী নির্বাচনে হানিফের পক্ষে মাঠে নামেন। এদিকে মেয়রপুত্র তনু মনোনয়ন কেনায় হানিফ অনুসারী নেতা-কর্মি থেকে শুরু করে দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তনুর মনোনয়ন কেনার বিষয়টি তারা ভালভাবে নিচ্ছেন না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসানুল আসকার হাসু বলেন, কুষ্টিয়ার উন্নয়নের রূপকার মাহবুবউল হানিফের কোন বিকল্প নেই। হানিফ ভাইয়ের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ। তিনি যে উন্নয়ন করেছেন তাতে দলমত নির্বিশেষে হানিফ ভাইকে সমর্থন দিয়ে আসছে। এবারো তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। দলের মধ্যে থেকে কেউ মনোনয়ন কিনতে পারে, সেটা বসে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করার সময় আছে।’
