হাওর অঞ্চল হবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

হাওর অঞ্চল হবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মার্চ ৯, ২০২৪

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, হাওর অঞ্চলের সম্ভাবনা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে হাওর অঞ্চল হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এজন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমাদের হাওর অঞ্চলের সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে হবে। গতকাল শুক্রবার (৮ মার্চ) ঢাকার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ গবেষণা ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত হাওরের সম্ভাবনা প্রাপ্তি ও সংকট উত্তরণের পথরেখা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, হাওর অঞ্চল হচ্ছে জীব বৈচিত্র্যের এক অপার আধার। হাওর কেন্দ্রিক অর্থনীতির যে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে বহুমুখী ও পরিকল্পিত উপায়ে উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। হাওর অঞ্চলের উন্নয়ন জাতীয় উন্নয়নের মুল ধারায় সম্পৃক্ত করা গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে মাছের উৎপাদন মূলত ব্যাহত হয় স্থায়ী অভয়াশ্রমের অভাব, ক্ষতিকর চায়না জালের ব্যবহার, ডিমওয়ালা মাছ ও পোনা নিধন, ইজারা প্রথা, সেচ দিয়ে মাছ শিকার, জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার এবং হাওরের গভীরতা কমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে পড়ার কারণে। তিনি এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তাগিদ দেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, হাওর অঞ্চলে বোরোর আবাদ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের জন্য সঠিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। হাওর এলাকার জীবন ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ভিত্তি অনেকটা পানি বিজড়িত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পানির সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকাÐ যেমন ধান, মাছ চাষ, হাঁস পালন, নৌকা যোগাযোগ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর হাওর অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে হাওর উন্নয়ন বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় হাওর এলাকার জনজীবন, জীবিকা, পরিবেশসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ২০১২ থেকে ২০৩২ সাল পর্যন্ত ২০ বছর মেয়াদি একটি হাওর মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মো. আব্দুর রহমান বলেন, মা মাছ যখন ডিম দেয় তখন আমরা ধরে ফেলি। কারেন্ট জাল দিয়ে ছোট ছোট রেণুপোনা ধরে ফেলি। এসব বিষয়ে সচেতন করার জন্য আমাদের সামাজিক ক্যাম্পেইন করতে হবে। হাওরের অভয়াশ্রমগুলোর ব্যবস্থাপনা ভালোভাবে করতে হবে। তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে একত্রে বসে একটা পেপার ওয়ার্ক তৈরি করতে এ সময় নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে থেকেও প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা পারি। করোনাসহ অনেক সমস্যা সমাধানে উন্নত বিশ্বের মালিক দাবিদারদের চেয়েও শেখ হাসিনা অনেক বেশি করতে সমর্থ হয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, হাওরের যেমন সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি নানাবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢলের কারণে মাছ চাষ ও বোরো ফসল উৎপাদন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বাহিত পলি জমে নদী ভরাট হওয়ায় নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তিনি এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহবান জানান। সেমিনারে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ গবেষণা ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট রিসার্চের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বক্তব্য রাখেন।