রঞ্জুউর রহমান ॥ কুষ্টিয়া শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৫ পালন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল দশটায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত। আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার (অঃদা) জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) ফয়সাল মাহমুদ, জেলা পরিষদ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মুকুল কুমার মৈত্র, কুষ্টিয়ার-৩ সাবেক সংসদ সদস্য হলেন সোহরাব উদ্দিন,মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কুষ্টিয়া জেলা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার হাজী রফিকুল আলম টুকু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলীসহ জুলাই আন্দোলনে ছাত্র প্রতিনিধি এবং জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও বেদনাভরে স্মরণ করি সেইসব সূর্যসন্তানদের, যাঁরা ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান দেশের মেধা, মনন ও বিবেকের প্রতীক। তারা পরিকল্পিতভাবে আমাদের জাতির বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে একটি বিষয় আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। আজও আমাদের দেশে এমন অনেক সূর্যসন্তান আছেন যাঁরা জ্ঞান, মেধা, সততা ও দেশপ্রেম দিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাঁদের অনেকেই নানাভাবে হুমকির মুখে পড়েন। আমরা এমন পরিস্থিতি চাই না। এক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু মুখে বলা নয়, কাজে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। আমাদের আচরণে যেন দ্বিচারিতা না থাকে এক কথা বলে আরেক কাজ করার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
আমি বিশ্বাস করি, যদি আমরা সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে পারি, তাহলে কুষ্টিয়াবাসীসহ এ দেশের মানুষ আগামী দিনে নিশ্চয়ই ভালো থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীরা শত ত্যাগ, রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও যদি আমরা সেই চেতনায় জাগ্রত হতে না পারি, তাহলে প্রকৃত মুক্তি ও সফলতা কখনোই আসবে না। বাস্তবতা হলো আমরা এখনো পুরোপুরি সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে পারিনি। আমারা চাই এমন একটি সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে সবাই থাকবে নিরাপদ, ন্যায়বিচার পাবে সহজে, যেখানে সুশাসন শুধু বইয়ের পাতায় নয় বাস্তব জীবনে চোখে পড়বে। আলোচনা শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
