বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ইউনিয়ন বিএনপি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিয়াউর রহমান জিয়া ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ বাবু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা বিএনপি আহবায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ। প্রধান বক্তা ছিলেন, জেলা বিএনপি সদস্য সচিব ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের ধানের শীষের কান্ডারি প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইসমাইল হোসেন মুরাদ, পৌর বিএনপির সাবেক আহবায়ক শওকত হাসান বুলবুল, জেলা বিএনপি সদস্য শহিদুজ্জামান খোকন ও আবু তালেব, জেলা বিএনপি সাবেক কোষাধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন প্রধান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল হাকিম মাসুদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সদস্য অধ্যাপক মাহাবুব আলম বিশুসহ দলীয় অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন সদর উপজেলা ছাত্র দলের আহবায়ক সোহাগ হোসেন। এসময় কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিগত ১৫টি বছর ভোটের জন্য লড়াই সংগ্রাম করেছেন। ক্ষমতা যাতে সঠিকভাবে হস্তান্তর হয়, সেই লড়াই করেছেন। আপনারা যে ভোট সেন্টারে যেয়ে ভোট দিতে পারেননি, দুই একজন বিচ্ছিন্নভাবে যাওয়ার পরেও হাত থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়েছে। সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের দেশনেত্রী আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।
আপনারা আপনাদের মনের মাধুরি দিয়ে যার প্রতি আস্থা বিশ্বাস করবেন, যে প্রতীককে ভালোবাসবেন, সেই প্রতীকে ভোট দেওয়ার শত চেষ্টা সত্ত্বেও আপনাদের ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত করে গোটা জাতিকে ধোকার পথে ফেলে দিয়েছে ফ্যাসিবাদ, আওয়ামী দোসররা। যে ভোটের লড়াই করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্যাতিত হলেন, স্বামী, সন্তান হারিয়েছেন। সেই মানুষটির আকাঙ্খা পূরন করতে আগামী ২০২৬ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এই নির্বাচনে আপনারা ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ রয়েছেন, তার সুস্থতায় সকলে দোয়া করবে। তিনি বলেন, এই দেশে যতবার আওয়ামী দোসররা ক্ষমতায় এসেছে ততবারই স্বৈরাচার শাসন করে নির্যাতন চালিয়েছে। আর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে, স্বৈরাচার শাসন মুক্ত করেছেন। দেশ পুনর্গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭১ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত যখন এদেশ ধ্বংস হয়েছিলো। তখন ১৯৭৫ এ পট পরিবর্তনের পরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। আপনারা জানেন সেই সময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পরে, মাত্র সাড়ে ৩ বছরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করে, জাতীয়তাবাদীর ভিত্তিতে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আত্মনির্ভরশীল দেশে রুপান্তরিত করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, ১৯৮২ সাল থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত এরশাদ সরকারের দুঃশাসনে আবার বাংলাদেশ ধ্বংস হয়েছিলো, ধুলিস্বাৎ হয়েছিলো, লন্ঠিত হয়েছিলো। পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে এ দেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর দেশকে আবার পুনর্গঠন করেছেন।
দেশকে উন্নয়নের পথে পরিচালিত করেছেন। প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বিগত ১৭ বছরে এই স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে আবারো ধব্বংস করেছে, লুন্ঠন করেছে, লুন্ঠিত হয়েছে এ দেশ। আমাদের সামনে আবার সুযোগ এসেছে এ দেশ বিনির্মানের, দেশটাকে পুনর্গঠনের। আপনারা জানেন দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে রুপান্তরিত হবে। তাই আগামী নির্বাচনে দেশের স্বার্থে, উন্নয়নের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে বিজয়ী করবেন। ইনশাআল্লাহ আপনাদের আশা আকাঙ্খা পূরন হবে।
