বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সরকার যায়, সরকার আসে; বিপ্লব হয়-কিন্তু শিক্ষায় বৈষম্য নিরসন হয় না এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক কর্মকর্তারা পদোন্নতিতে বৈষম্যের প্রতিবাদে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল রবিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২৪’র গৌরবোজ্জ্বল বিপ্লবের পর প্রায় সব ক্যাডারেই যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন, এমনকি অনেক ক্যাডারে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি ও সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক কর্মকর্তারা ১২ বছর অতিবাহিত করেও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন—যা চরম বৈষম্যের উদাহরণ।
বক্তারা আরও বলেন, ৩২তম থেকে ৩৭তম বিসিএস পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার প্রভাষক পদোন্নতির সকল যোগ্যতা অর্জন করেও বছরের পর বছর অপেক্ষায় রয়েছেন। অন্যান্য ক্যাডারে একই সময়ের কর্মকর্তারা একাধিক টায়ারে পদোন্নতি পেলেও শিক্ষা ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি এখন “সোনার পাথরবাটিতে” পরিণত হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বরাবরের মতোই শিক্ষা ক্যাডারের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করছেন। অন্যান্য ক্যাডারের ৩৬তম ব্যাচ ২০২৩ সালে এবং ৩৭তম ব্যাচ ২০২৪ সালে পদোন্নতি পেলেও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা এখনও ৫ বছরের পদোন্নতি ১২ বছরে এসেও পাননি। এমনকি স্বাস্থ্য ক্যাডারের শত শত কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দেওয়া হলেও শিক্ষা ক্যাডারে সে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বক্তারা শিক্ষা ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতি, পদ সৃষ্টি, আপগ্রেডেশন এবং ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির মাধ্যমে বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন প্রভাষক মো. মজিদুল হক, মো. দীন মুহম্মদ, মো. রাকিবুল ইসলাম, মো. জহির রায়হান ও মো. টিপু সুলতানসহ অনেকে। তারা বলেন, লাখো প্রতিযোগীকে টপকে মেধার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির আদেশে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েও আমরা আজ পদোন্নতিতে বঞ্চিত। এটি শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, শিক্ষকদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা শিক্ষা ক্যাডারে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। নতুবা কঠোর আন্দোলনের হুসিয়ারী দেন বক্তারা।
