ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ১৩, ২০২৩
ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

ঝুঁকিতে শহর রক্ষা বাঁধের কয়েকশ মিটার এলাকা।  ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধসহ নদী পাড়ের ইকোপার্ক ,মসজিদ, শ্মশান সহ প্রায় শতাধিক  আধা-পাকা বসতবাড়ি।

ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

দীর্ঘদিন  সংস্কারের অভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে কুষ্টিয়া কুমারখালী শহর রক্ষা বাঁধ। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। তাতে শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০টি অংশে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বন্যার আতঙ্কে দিন কাটছে কুমারখালী পৌরবাসীর। প্রতি বছর নদীর পানি ফুঁসে উঠলেই বাঁধ হুমকির মুখে পড়ে। সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই বাঁধে ছিদ্র ও ধস শুরু হয়।

google news

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জানা যায়, ভাঙনরোধে কিছু বালিভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। তবে সম্পূর্ণ ভাঙনরোধ করা সম্ভাব হয়নি এখনও।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহর রক্ষা  সেই বাঁধের ইকোপার্ক এলাকায় বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙা দেখা দিয়েছে । বাঁধের এক পাশে ৫০ মিটারের মধ্যে কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে  দুই বছর আগের।  চারিদিকে পানি বেড়ে সব ডুবে গেছে। পানি পড়ার সঙ্গে – সঙ্গে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন, এলাকাবাসী।

ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই  শহর রক্ষা বাঁধের বেশ কিছু অংশে সংস্কারের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজই শুরু হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত স্থান দিয়ে যেকোনো মুহূর্তে পানি প্রবেশ করে বাঁধের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এমনকি বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থান। এ ছাড়া গড়াই নদীতে পানির চাপ বাড়লে বাঁধটির ধসে যাওয়া অংশ দিয়ে পানি ঢুকে পৌরশহর তলিয়ে যেতে পারে।

শহর রক্ষা বাঁধের বেশ কিছু অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠলেও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারবিহীন পড়ে আছে। দুই বছর আগে  শহর রক্ষা বাঁধে শুকনো মৌসুমে আকস্মিক ভাঙন দেখা দিয়েছিল । এতে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আবারো নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বাধের তীরে বসবাসকারী ছিন্নমূল ভূমিহীনদের কয়েকশ বসতবাড়ি।

পৌর পাড়া এলাকার সবুজ হোসেন বলেন, বাঁধ টি অনেক পুরাতন হওয়ায় এবং সংস্কার না হওয়ায় বাঁধ ভাঙার  দেখতে পারছি আমরা, এতে করে আমরা আতংকে রয়েছি। যে কোন সময় বড় ধরনের ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে।

এদিকে ভাঙন এলাকার মানুষ বলছেন- বাঁধটি অনেক পুরাতন এর আগে কখনো এমন ভাঙন দেখা যায়নি। এবারের যে কোন সময়ে বড় ভাঙনের সম্ভবনা রয়েছে।  অতিদ্রুত ভাঙন প্রতিরোধ করা না গেলে এই বর্ষা মৌসুমে শহরে পানি ঢুকে পড়বে। এদিকে, ভাঙন ছড়িয়ে পড়ার খবরে শহরে ছড়িয়ে পড়লে হাজার- হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে যাচ্ছে।

ঝুঁকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, আতঙ্কে কুমারখালীবাসী

পৌর ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস, এম রফিক বলেন, শহর রক্ষা বাঁধটি অনেক পুরাতন হওয়ায়। বাঁধে হঠাৎ ভাঙন আতঙ্কে শুধু এই এলাকা না’ পুরো শহর আতংকে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এমনটি আশা করছি।তিনি আরো বলেন, দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধ না করা গেলে কুমারখালী শহর ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বাঁধের পাশের বাসিন্দা লিটন হোসেন বলেন, বাঁধ নিয়ে আমরা ভয়ে থাকি। রাতারাতি নদীতে পানি বাড়লেই এ বাধ ধসে যেতে পারে। এমনকি বন্যার পানি বাড়লে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল জানান, আমি এর আগেও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে, আবাসন ও নদীর আশপাশের এলাকা ভাঙন বিষয়ে অবহিত করছিলাম।  সরেজমিনে গিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপ- প্রকৌশলী পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়া মোঃ ইয়ামিন হক জানান, বাঁধটি অনেক পুরাতন। কি কারণে বাঁধে ভাঙন দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি জানতে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বন্যার সময়  আপৎকালীন  বরাদ্দ থাকে। এর আগে ৩৫ মিটার জায়গা জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছে। নতুন করে বাঁধ সংস্কারের জন্য আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে  শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বাঁধটি অনেক পুরাতন হওয়ায় এবং সংস্কার কাজ না হওয়ায় দিন – দিন ঝুঁকি বাড়ছে।

আরও পড়ুন: