মরিচা ইউনিয়নের উজ্জ্বল সরদার এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

মরিচা ইউনিয়নের উজ্জ্বল সরদার এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ১, ২০২৫

দৌলতপুরে সন্ত্রাসের অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস, জমি ও খড়ের মাঠ দখল, চাঁদাবাজি, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে মূলত ‘উজ্জ্বল সরদার বাহিনী’। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভুরকা হাটখোলা বাজারের বাহিনীর প্রধান উজ্জ্বল সরদার জোড়া হত্যা মামলার আসামি হলেও এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

২০২৩ সালেরো জোড়া মার্ডার মামলার আসামী সরদার বাহিনীর উজ্জ্বল সরদার। এলাকাবাসীর দাবি, একসময়ের কুখ্যাত ‘লালচাঁদ বাহিনীর’ সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন উজ্জ্বল সরদার। বর্তমানে তিনি নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে পদ্মার চরাঞ্চলে দখলবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, মরিচা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুল মন্ডল, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা ও তার ছেলে শিশির মোল্লা, উপজেলা বিএনপির অস্ত্র ও মাদক আমদানিকারক, দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন, এদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে উজ্জ্বল সরদার বহুবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছে।

তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি দৌলতপুর উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরে কুষ্টিয়া জেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতির পদও দখল করেন।সেই সুযোগে অবৈধ বালু ব্যবসা, চরভূমি দখল, নদীপথে অস্ত্র ও মাদক বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়ে তোলেন কোটি কোটি টাকার সাম্রাজ্য।গত ২০২৩ সালের ১৩ জুন মাসে ভুরকাপাড়া হাটখোলা বাজার এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও গরুতে ক্ষেতের পাট খাওয়াকে কেন্দ্র করে সরদার ও মালিথা বংশের মধ্যে সংঘর্ষে ভেলোশ মালিথা (৪০) ও বজলু মালিথা (৪২) নিহত হন।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উজ্জ্বল সরদার ও তার সহযোগীদের নাম এজাহারে উল্লেখ থাকলেও সেই সময় সন্ত্রাসী উজ্জ্বল সরদার ক্ষমতার অপব্যবহার কারনে প্রশাসন নীরবে ছিলেন। মরিচা ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ জানান, “উজ্জ্বল সরদার ও তার বাহিনী এলাকায় খড়ের মাঠ, বালুর ঘাট, এমনকি সরকারি জমিও দখল করছে। উজ্জ্বল সরদার কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে অবৈধ বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করেন।

বিনিময়ে ওই কর্মকর্তারা অর্থনৈতিক সুবিধা পান বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। তবে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক্সেন রশিদুর রহমান বলেন, উজ্জ্বল সরদার পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার এন লিষ্টেড ঠিকাদার না, তিনি সব কন্টাকে কাজ করে, তবে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়নবোর্ডের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী উজ্জ্বল সরদারের অপকর্মের সাথে জড়িত থাকলে, অভিযোগ পেলে, সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

তবে সরদার বাহিনীর বিষয়ে স্থানীয়রা আরো বলেন, জমি দখল, খড়ের মাঠ নিয়ে সংঘর্ষে বহু প্রাণহানি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতায় বহাল তবিয়তে ‘উজ্জ্বল সরদার বাহিনী’ ব্যবসা-বাণিজ্য চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। আমরা প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ চাই।”এলাকার জনগনের দাবি, মরিচা ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় ব্যবসায়ী সমাজ, প্রশাসনের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। “উজ্জ্বল সরদার ও তার বাহিনীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি না দিলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে না।

দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সোলাইমান হোসেন বলেন,“উজ্জ্বল সরদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।হত্যা মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে, তবে উজ্বল সরদার স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি পরিবারের ছেলের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, প্রশাসনের সাথে এমন ধরনের কোনো সম্পর্ক নেই জানামতে, বিশেষ করে আমার দৌলতপুর থানাতে নেই।