ভেড়ামারায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

ভেড়ামারায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: নভেম্বর ২৬, ২০২৩
ভেড়ামারায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় চলতি বছরে ১৪৫ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ করা হয়েছে। দিন দিন তুলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ভেড়ামারায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

ভেড়ামারায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

ভেড়ামারায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে ব্যাপক ফলন দেখে বুঝা যাচ্ছে খরচের তুলনায় এবার কৃষকরা কয়েক গুণ বেশি লাভ হবে। কয়েক বছর ধরে কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। ভেড়ামারা কটন ইউনিট কর্মকর্তা মনজুয়ার বেগম জানান, রুপালী-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২, ইস্পাহানী শুভ্র-৩, লালতীর ডিএম-৪, সিবি-১, উফশী, বিটি তুলা জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। এই জাত গুলো মাঠে ১৬-২০ মন হারে বিঘা প্রতি ফলন হয়।

উপজেলায় চলতি বছরে ১৪৫ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদের লক্ষ্যে মাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রদর্শনী ও কৃষকের নিজ অর্থায়নে চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় আগামীতে চাষির সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশা করছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় কৃষকরা। তুলা গ্রীষ্মকালীন ফসল। মে মাসের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত জমিতে তুলা বীজ বপন করতে হয়। বীজ বপনের ৬ মাস পর তুলা সংগ্রহ করা যায়।

তুলা চাষ ছড়িয়ে দিতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও বিভিন্ন প্রকল্প কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করছে সরকার। ভেড়ামারা উপজেলায় কম পুঁজিতে নামে মাত্র শ্রমে ও সরকারি সহযোগিতায় তুলা চাষের পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাদের উৎপাদিত তুলা সরাসরি তুলা উন্নয়ন বোর্ড ন্যায্য দামে কিনে নেয়। ফলে কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় তুলাতে অধিক লাভবান হচ্ছেন। সরকারি সহায়তায় কৃষকরা সিবি-১২ এবং হাইব্রিড প্রজাতির রুপালি-১ জাতের তুলার চাষ করছিলেন। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বেড়ে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেতে এসিট, জেসিট, আমেরিকান বোলওয়ার্ম, স্পটেট বোলওয়ার্ম ও আঁচা পোকার অক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এতে তুলা চাষি কীটনাশকের বদলে ফেরোম্যান ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতিতে বেশ উপকার পেয়েছেন।

চাষি আমজাদ হোসেন জানান, বর্তমানে তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। ৫ বিঘা জমি বন্ধক নিয়ে তুলা চাষ করেছেন। তুলা চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে অনেক অনুর্বর, নিস্ফলা বা অনাবাদি জমিতে তুলা চাষ করে অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, নিস্ফলা জমিতে তুলা চাষ করায় একদিকে যেমন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে কৃষকরা বেশ টাকা পাচ্ছেন, তাদের পরিবারে আসছে স্বচ্ছলতা। তাই অনেকে ধান ও গমসহ বিভিন্ন আবাদ ছেড়ে তুলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।

তুলা চাষিরা জানান, রুপালী-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২, ইস্পাহানী শুভ্র-৩, লালতীর ডিএম-৪, সিবি-১, উফশী, বিটি তুলা জাতের তুলা প্রতি বিঘাতে বীজসহ উৎপাদন হয় ১৫ মণ থেকে ২০ মণ করে। যার বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। এমন অনুর্বর জমিতে অন্য কোনো ফসলে এই লাভ পাওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব নয়। আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করা যায় বলে চাষিরা জানান। তাইতো তুলা চাষিদের মধ্যে অনেকে বলেন, জমির তুলা চাষে, লাখপতি অনয়াসে।