ভেড়ামারায় ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে জখম - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

ভেড়ামারায় ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে জখম

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মে ১১, ২০২৪

ভেড়ামারা প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর মধ্যপাড়ায় জহুরুল ইসলাম মন্টু (৫৩) নামে এক ওয়ার্ড মেম্বরকে পিটিয়ে মারাত্বক জখমের ঘটনা ঘটেছে। আহত ওয়ার্ড মেম্বর চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড চন্ডিপুর মধ্যপাড়ার মেম্বর ও একই গ্রামের মৃত মিনহাজ উদ্দিন সরদারের ছেলে। এই ঘটনায় ভেড়ামারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল ইসলাম মন্টু। অভিযুক্তরা হলেন ভেড়ামারা উপজেলার চন্ডিপুর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত ইউছুফ সরদারের ছেলে মোঃ আব্দুল হালিম (৪৮), মোঃ একরামুল হক ডালিম (৪২), মোঃ আব্দুল হালিমের ছেলে মাসুদ পারভেজ ও একই গ্রামের মোঃ ইদ্রীস সরদারের ছেলে মোঃ সঞ্চয় (১৯)। থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল ইসলাম মন্টুর চাচাতো ভাইয়ের মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যোক্ত করে আসছিলো চন্ডিপুর মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে মাসুদ পারভেজ। উত্যোক্ত করার বিষয়টি অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজের অভিভাবকদের জানালে অভিযুক্তদের যোগাসাজেশে ওয়ার্ড সদস্য জহুরুল ইসলাম মন্টুর চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া ছোহাকে অপহরন করে মাসুদ পারভেজ ও তার সহযোগীরা। অভিযোগ আছে মাসুদ পারভেজকে এই অপহরণে উৎসাহ দিয়েছিলো তার আপন চাচা একরামুল হক ডালিম (৪২)। এই অপহরণের ঘটনায় অপহৃত জান্নাতুল মাওয়া ছোহার মামা সোহেল রানা ভেড়ামারা থানায় মাসুদ পারভেজ, তার আপন চাচা একরামুল হক ডালিম, মা মোছাঃ পারুলা খাতুনকে আসামী করে ভেড়ামারা থানায় মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় ঘটনার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দিয়েছে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মাসুদ পারভেজের চাচা একরামুল হক ডালিম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সেপাহি পদে কর্মরত আছেন। উক্ত মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর একরামুল হক ডালিমকে সাময়িক বরখাস্ত করে। বর্তমানে সে বরখাস্ত অবস্থায় আছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল ইসলাম মন্টুর চাচাতো ভাইয়ের মেয়েকে অপহরণের ঘটনার পর একাধিক বার অভিযুক্তরা আপোষ মীমাংসা প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাক্ষিত হন। কারন উক্ত মামলায় একরামুল হক ডালিম এখনও বরখাস্ত অবস্থায় আছেন। আপোষ মীমাংসা না হওয়ার বিষয়ে অভিযুক্তরা ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল ইসলাম মন্টুর দিকে অভিযোগ তুলে তাকে পিটিয়ে মারাত্বক জখম করেছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। কিন্তু ভুক্তভোগী ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল ইসলাম মন্টু জানিয়েছেন উক্ত ঘটনায় মামলার ঘটনাটি আপোষ মীমাংসা করার কোন সুযোগ তার হাতে নেই। কারন ওই মামলার বাদী আমার ভাইয়ের শালা সোহেল রানা। আমার চাচাতো ভাই এবং তার পরিবার মামলাটি আপোষ মীমাংসা করতে রাজি নয়। বর্তমানে মামলাটি কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন। মামলা নং-২৪৯/২৩ ও সি.আর-০১/২৪। ওই মামলা আপোষ করতে ব্যর্থ হয়ে এরই জেরে, গতকাল শুক্রবার ভোর অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় ভেড়ামারা থানাধীন চন্ডিপুর মধ্যপাড়া গ্রামস্থ আমার চাচা মোঃ আব্দুল শেখ (৫৮) বাড়ির সামনের রাস্তায় আসলে, ১ নং আসামী মোঃ আব্দুল হালিম আমার চাচাকে পথরোধ করে। চাচা বিবাদীকে পথরোধ করার কারন জানতে চাইলে বিবাদী চাচাকে মিথ্যা দোষারোপ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ প্রদান করত বিবাদী ক্ষীপ্ত হয়ে চাচাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড়, কিলঘুসি ও লাথি দিয়ে মেরে চাচার গালে, মুখে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেদনাদায়ক নিলাফোলা জখম করে। বিবাদীর তান্ডবে পরিবারের ও স্থানীয় প্রতিবেশিগনেরা সবাই এগিয়ে আসলে বিবাদী খুন জখমের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। এরই জেরে, গতকাল শুক্রবার সকাল অনুমান ০৯:৩০ ঘটিকার সময় বিবাদীরা যোগসাজসে ও পরিকল্পিত দেশীয় ধারালো অস্ত্র রামদা, লোহার পাইপ, হাতুড়ি ও লাঠি-সোঠা প্রভৃতি নিয়ে জনতাবন্ধে বেআইনী আমার বাড়িতে প্রবেশ করে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দেয়া শুরু করে। আমি এগিয়ে গিয়ে বিবাদীদের গালি দিতে নিষেধ করলে, ১ নং বিবাদী আমার জামার কলার চেপে ধরে বাড়ির সামনের রাস্তায় টেনে এনে আমকে মেরে ফেলার হুকুম দিলে, পাশে থাকা ২ নং বিবাদী মোঃ একরামুল হক ডালিমের হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মাথায় কোপ দিলে কোপটি আমার মাথার উপরে মাঝে লেগে গুরুতর কাটাছিড়া রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত করে। পাশে থাকা আমার চাচা মোঃ সাইদুল শেখ (৫২) ও চাচাত ভাই মোঃ রিপনদ্বয়েরা আমাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসলে ৩ নং বিবাদী মোঃ মাসুদ পারভেজের হাতে থাকা লোহার পাইপ দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে চাচার মাথায় আঘাত করলে চাচা সড়ে দাঁড়ালে আঘাতটি চাচার ডান হাতের বাহুতে লাগলে চাচা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বিবাদী চাচাকে এলোপাথাড়ি মেরে চাচার পিঠে, বুকে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মেরে বেদনাদায়ক কালোশিরা ও নিলাফোলা জখম করে। ৪ নং বিবাদী মোঃ সঞ্চয়ের হাতে থাকা হাতুড়ি দিয়ে আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় মারলে ভাই আঘাতটি ঠেকানোর চেষ্টা করলে আঘাতটি ভাইয়ের পিঠে লেগে ভাই পড়ে গেলে বিবাদী ভাইকে এলোপাথাড়ি মেরে ভাইয়ের ঘাড়ে, বুকে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মেরে বেদনাদায়ক কালোশিরা ও নিলাফোলা জখম করে। এসময় স্থানীয় লোকজনেরা এগিয়ে আসলে বিবাদীরা খুন জখমের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। হামলার ঘটনার পর স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে দ্রুত ৫০ শয্যা ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। ঘটনার পর ওয়ার্ড মেম্বর জহুরুল ইসলাম মন্টু ৪জনের নাম উল্লেখ করে ভেড়ামারা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়ের পর পরই ভেড়ামারা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভেড়ামারা থানার অফিসার্স ইনচার্জ জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ওয়ার্ড সদস্য থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।