বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সাইফ উদ্দিন আল আজাদ আওয়ামী লীগ শাসন আমলে কখনো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু ওলামা লীগের ব্যানারে, আবার কখনো বিএনপি ও জামায়েতকে সন্ত্রাসী দল হিসাবে আখ্যা দিয়ে ব্যনার হাতে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় ছিলেন সবর। নিজের নামের আগে মাওলানা ও মুফতি ব্যবহার করলে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশুনা করেছেন সেই বিষয়ে জানেন না কেউ। অথচ মাওলানা হওয়ার জন্য সাধারণত কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস (স্নাতকোত্তর সমমান) বা সমমানের ডিগ্রি সম্পন্ন করতে হয় এবং আরবি ভাষা, কোরআন ও হাদিস শাস্ত্রে গভীর জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
এছাড়াও, উসুল আল-ফিকহ (ইসলামিক আইনশাস্ত্রের মূলনীতি) শাস্ত্রে পারদর্শী হতে হয় এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। ‘মুফতী’ শব্দটি আরবি: ক্রিয়াপদ “আফতা” থেকে এসেছে, যার অর্থ “ধর্মীয় বা আইনগত প্রশ্নের উত্তর প্রদান করা।” এটি কর্তা রূপে ব্যবহৃত হয়, যার আভিধানিক অর্থ হলো “ফতোয়া প্রদানকারী” বা “ধর্মীয় পরামর্শদাতা।” মুফতি একজন বিশেষজ্ঞ, যিনি কুরআন, হাদিস, এবং ফিকহের আলোকে মানুষের জিজ্ঞাসার সমাধান দেন। মুফতি হওয়ার জন্য আরবি, কোরআন ও হাদিস, উসুল আল-ফিকহ (ইসলামিক আইনের মূলনীতি) এবং সমসাময়িক জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এছাড়া, ফিকহি বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা এবং অভিজ্ঞ শিক্ষকের কাছে প্রশিক্ষণ থাকা আবশ্যক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাইফ উদ্দিন আল আজাদ মাওলানা বা মুফতি হওয়ার মত কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও মানুষকে দীর্ঘ দিন দাঁড়ি টুপির অন্তরালে বোকা বানিয়ে চলেছেন। আওয়ামী লীগ শাসন আমলে বিরোধী দল যেমন বিএনপি এবং জামায়েত ইসলামীকে কোন ঠাসা করতে তিনি ছিলেন তৎপর।
লাঠি সোটা নিয়ে বিএনপি এবং জামায়েত ইসলামীর বিরুদ্ধে মাঠেও নামতে দেখা গেছে তাকে। অথচ ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের পরে তিনি নিজের ভোল পাল্টিয়ে ইসলামী আন্দোলন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা শাখার শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসাবে ফেসবুক থেকে পোষ্ট দিয়ে থাকেন। অথচ ভন্ড সাইফ উদ্দিন আল আজাদ ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলা শাখার শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নয় বলে নিশ্চিত করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আহমদ আলী। খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, সাইফ উদ্দিন আল আজাদ এর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে ছাত্র জনতাকে নীপিড়নের অভিযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন নাসিম আলম নামের এক যুবক। যার মামলা নং ১৭।
এছাড়াও সে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান উপর হামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম। যদিও অজানা কারণে সেই মামলায় তাকে আসামী করা হয়নি। তবে অনেকের ধারণা তারে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে মাহমুদুর রহমান উপর হামলা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে। সাইফ উদ্দীন আল আজাদ সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব ও জেলা মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফরোজা আক্তার ডিউ এর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব ও আফরোজা আক্তার ডিউ এর বিরুদ্ধে প্রায় ডজন খানেক হত্যা, হতাচেষ্টা ও জালিয়াতির মামলা রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের পর থেকে রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব ও আফরোজা আক্তার ডিউ গ্রুপের অনেকেই বিভিন্ন মামলায় জেল হাজতে রয়েছে এবং বাকীরা পলতাক।
পলাতকদের মধ্যে ওয়ালিদুজ্জামান শুভ দেশ ছেড়ে পালিয়ে বর্তমানে দুবাইতে আশ্রয় নিয়েছে। ওয়ালিদুজ্জামান শুভ সেশন মামলা নম্বর ২৩২/২০২২ এর একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী এবং সাইফ উদ্দীন আল আজাদ একান্ত সহচারী। এছাড়াও আফরোজা আক্তার ডিউ জাল সনদে দীর্ঘ একযুগের বেশী কুষ্টিয়া কালেক্টরেট স্কুল চাকুরীরত ছিলো। জাল সনদের বিষয় নিয়ে দেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে চাকুরী হারান আফরোজা আক্তার ডিউ। অনেকের ধারণা সাইফ উদ্দীন আল আজাদও জাল সনদ ব্যবহার করে নিজেকে মুফতি ও মাওলানা পরিচয় দেন। যা তার সনদ যাচাই বাছাই করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। দাঁড়ি মুখে টুপি মাথায় দিয়ে সাইফ উদ্দিন আল আজাদ দীর্ঘ দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের নামে অপপ্রচার করে আসছে। যা ইসলামে বিরুদ্ধ। সাইফ উদ্দীন আল আজাদ সম্পর্কে তার নিজ এলাকয় খোঁজ নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। এলাকাবাসী জানান, সে ভন্ড প্রকৃতির মানুষ। জীবণে হজ্বে না গিয়েও কাবা শরীফের ছবি এডিট করে নিজে হজ্বে গিয়েছিলেন বলে চালিয়ে দিয়েছে। যা তার পাসপোর্ট চেক করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। (চলমান পর্ব-১) প্রথম পর্ব
