দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ দৌলতপুরে কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ ও সর্বশেষ গঠিত বিতর্কিত গভর্নিং কমিটি বিলুপ্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার (৬ অক্টোবর) সকাল ১১ টার সময় দৌলতপুর কলেজ চত্বরে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দৌলতপুর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন কমিটি অনোমদন দেয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান একজন দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ, স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকারের দোসর, অস্ত্রবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার।
দুর্নীতিবাজ শিক্ষক, তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। যে কারনে তাকে অপসারণ করতে হবে। সদ্য গঠিত কলেজের এডহক গভর্নিং কমিটিকে বিতর্কিত আখ্যায়িত করে শিক্ষার্থীরা বলেন, কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান তার সকল অপকর্মকে ঢাকতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদিত কমিটিকে সংশোধন করে গত ৩ অক্টোবর তার আস্থাভাজনদের নিয়ে কমিটি করেছে। যা নিয়ে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরী করেছে। তাই সর্বশেষ ৩ অক্টোবরের সংশোধিত কমিটিকে বাতিল ঘোষনা করার দাবী করেন শিক্ষার্থীরা।
গত দুই সপ্তাহে দৌলতপুর কলেজে ৩ বার গভর্নিং বডির এডহক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর পূর্বেক কমিটি পরিবর্তন করে এডহক কমিটি গঠনের নতুন চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে সভাপতি মো. আজিজুল হকের মনোনয়ন পরিবর্তন পূর্বক তার স্থলে সভাপতি হিসেবে মোহা. আলতাফ হোসেন এবং বিদ্যোৎসাহী মো. ফজলুর রহমানের মনোনয়ন পরিবর্তন করে মোহা. আলাউদ্দিনকে মনোনয়ন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এর আগে কলেজের অধ্যক্ষ সাদিকুজ্জামান খান বিধি বহির্ভতভাবে গত ১৭/০৯/২০২৪ তারিখে আমানুল হককে সভাপতি ও রেদওনুর রহমানকে বিদ্যৎসাহী করে এডহক কমিটির চিঠি ইস্যু করান। তার একদিন পরই আরেক চিঠিতে আমানুল হককে পরিবর্তন করে সভাপতি করা হয় তার ছোট ভাই মো. আজিজুল হককে এবং বিদ্যোৎসাহী করা হয় মো. ফজলুর রহমানকে। এই কমিটি গত ২৫/০৯/২০২৪ এই কমিটি প্রথম সভাও করে কলেজে।
এদিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৩ বার দৌলতপুর কলেজের ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও পরিবর্তন নিয়ে কলেজের শিক্ষক ও অভিভাবক মহলে মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কলেজের একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবক জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার ফলে কলেজের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। গত ৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর থেকে কলেজে অনুপস্থিত কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিকুজ্জামান খান।
প্রথম কমিটি ইস্যু হওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য কলেজে এসেই সটকে পড়েন অধ্যক্ষ। কলেজের অধ্যক্ষ সাদিকুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবী তুলে একাধিকবার বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ও দুর্নীতির তথ্য প্রমান পাওয়ায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর কলেজের সিনিয়র শিক্ষক আমিরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দ্বায়িত্ব দেন কমিটি। একারণেই অধ্যক্ষ সাদিকুজ্জামান খান নিজে উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার পরও কৌশলে উপজেলা বিএনপির একটি অংশের উপর ভর করে নিজের অপকর্মকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিমত।
