বিজিবির বাবুর্চী বাসারুলের বিরুদ্ধে ল্যাঃ নায়েক পরিচয়ে একাধিক বিয়ে - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

বিজিবির বাবুর্চী বাসারুলের বিরুদ্ধে ল্যাঃ নায়েক পরিচয়ে একাধিক বিয়ে

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জানুয়ারি ৫, ২০২৫

রবিউল ইসলাম হৃদয় ॥ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (বাবুর্চী) হিসেবে কর্মরত থাকলেও নিজেকে ল্যাঃ নায়েক পরিচয় দিয়ে কয়েকটি জেলায় করেছেন একাধিক বিয়ে  বাসারুল ইসলাম। যৌতুক হিসেবে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। তারপরেও তিনি বিবাহ বহির্ভূত একাধিক নারির সাথে  প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে মেয়েদের সাথে উলঙ্গ অবস্থায় কথা বলে সেগুলো স্ক্রিনশট ও ভিডিও ধারন করে তাদের কে জোর করে বিয়ে ও ব্লাকমেইল করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে । মোঃ বাসারুল ইসলাম ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ধাওড়া এলাকার বকুল খাঁনের ছেলে। বর্তমানে তিনি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটিলয়ন ১১ তে বাবুর্চী হিসেবে চাকরিরত আছেন। নিজেকে বাবুর্চী পরিচয় দিয়ে ছোট মনে হবে বলে পরিচয় গোপন করে ল্যাঃ নায়েক পরিচয় দেন। বাসারুলের ব্যাক্তিগত ব্যাচ নং -৫১৩৪।

কুষ্টিয়া, খোকসা,ঝিনাইদহ,বাগেরহাট সহ কয়েকটি জেলায় নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে একাধিক বিয়ে করেছেন। বিয়ে করে কাউকেই বাড়িতে না এনে থাকেন বিভিন্ন এলাকায় ফ্লাট ভাড়া করে। যাতে কেউ কোন সময় একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে না পারে। কয়েকজন বউয়ের কাছে তার ছেলে ও মেয়ে সন্তানও রয়েছে। শুধু তাই নয় বাসারুল প্রত্যেক নতুন নতুন জায়গায় বিয়ে করার পর সেসমস্ত শশুর বাড়ির লোকজনদের কাছ থেকে  লক্ষ লক্ষ টাকা যৌতুক গ্রহন করেন। আবার শশুর বাড়ির লোকজন সহ আশেপাশের মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিজিবিতে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সেসব এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এরকম ভুক্তভোগী অনেকেই রয়েছেন। তারমধ্যে বাসারুলের নিজ এলাকার একজন তার নামে কোর্টে একটি মামলাও করেছিলো। মামলা সুত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা এলাকার ধাওড়া গ্রামের বাকারুলের ইসলামের ছোটভাই বাহাদুর কে বিজিবিতে চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বাসারুল ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে টাকা গ্রহন করেন।

কিন্তু বাসারুল বাহাদুরকে চাকুরী দিতে ব্যার্থ হয়। পরে বাকারুল তার ভাইয়ের চাকুরী না হওয়ার জন্য বাসারুলের কাছে টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করতে থাকে এবং তার নামীয় সোনালী ব্যংকের একটি চেক প্রদান করে। তারপরেও সেই টাকা ফেরত না দিলে ভুক্তভোগী বাকারুল ঝিনাইদহ আদালতে বাসারুলের বিরুদ্ধে একটি প্রতারনা মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ঝিনাইদহ সিআর-৩৫১/১৮ । বর্তমানে সেই মামলা মিমাংসা করে ফেলেছে বলে জানা গেছে। বাসারুল কুষ্টিয়া খোকসা বনগ্রাম এলাকায় বিয়ে করেন। তার সাথে প্রায় ২-৩ বছর সংসার করার পরে ২০১৫ সালে তালাক দিয়ে দেন।এরই মাঝে গোপনভাবে বিয়ে করেছে বাগেরহাট জেলার মোংলা এলাকায়। সেই সংসারেও ৭ বছরের একটা মেয়ে আছে। মোংলা এলাকায় ওই বউয়ের ফ্যামিলির লোকজনদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গোপনে পালিয়ে যায়। মোংলা এলাকা থেকে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছে। সেই মামলায় বাসারুল সহ তার বাবা মার বিরুদ্ধে কয়েকবছরের জেল হয়েছে।

তার পরেও তারা বহাল তবিয়তে রয়েছে বিজিবির সদস্য হওয়ার ক্ষমতার জোড়ে। এরই মাঝে আবারো নতুন করে প্রতারনা করার জন্য কুষ্টিয়া পান্টি এলাকায় বিয়ে করেন। সেখানেই প্রায় ৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সেই পরিবারের কাছ থেকেও মোটা অংকের যৌতুক ও আশেপাশের মানুষের কাছ থেকে চাকুরী দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে আছেন বাসারুল ইসলাম। একমাত্র এই বাসারুল ইসলামের কারনে প্রায় ৫ টি পরিবার ও একাধিক নারীর জীবন ধংসের পথে চলে যাচ্ছে। এই বাসারুলের কঠিন থেকে কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বাসারুলের এক স্ত্রী জানান, আমাকে তার আগের বিয়ের কথা গোপন করে বিয়ে করে। আমার সাথে সংসার করার সময় অনেক নির্যাতন করেছে। আমার ঘড়ে তার একটি সন্তানও রয়েছে। আমি ছাড়াও অনেক মেয়েকে এভাবেই বিয়ে করেছে। আমি ওর বিরুদ্ধে মামলা করেছি। ওর নামের ওয়ারেন্ট বের হয়েছে।

বিজিবি বলে ওর কিছুই করছেনা পুলিশ। আমি ওর কঠিন থেকে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত বিজিবির চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী বাসারুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে এসব গুজব। তিনি ব্যাস্ততা দেখিয়ে ফোনটি কেটে দেন। বিষয়টি নিয়ে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটিলয়নের অধিনায়ক (সিও) লে.কর্ণেল এস কে এম কফিল উদ্দিন এর সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই বিষয়টি নিয়ে আমার জানা নেই। আপনি জানালেন তাই জানলাম। আর বাবুর্চী থেকে ল্যানঃ নায়েকের পরিচয় দেওয়া মানে এটা সে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। এগুলো কোন অভিযোগ আসলে তদন্তপূর্বক ব্যাবস্থা নেওয়া হয়।