নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া তামজিদ হোসেন জনিকে (২৬) হত্যাচেষ্টা মামলায় গত বৃহস্পতিবার তিনজন কাউন্সিলর (আ’লীগ নেতা) কে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) তাদের তিনজন সহ মোট ৬ আসামীকে জামিন দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানার আদালত। তাদের জামিন বাতিল ও বিচারককে প্রত্যাহারের দাবিতে দিনটিতে দুপুরের দিকে বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধন করেছে ছাত্র-জনতা। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সামনে বিক্ষোভে ছাত্র-জনতার সাথে বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী সহ শতশত মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়।
জামিন পাওয়া তিন কাউন্সিলর হলেন- কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল হক মুরাদ, ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম নজু ও ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছ কোরাইশী। তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত রয়েছেন। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক তৌকির আহমেদ বলেন, জীবন ও রক্তের বিনিময়ে আমরা ছাত্র-জনতা দেশটাকে নতুনভাবে স্বাধীন করেছি।
আন্দোলনকারীকে হত্যা চেষ্টা মামলায় আওয়ামী লীগের নেতা, পৌরসভার কাউন্সিলর সহ ৬ জনকে জামিন দেয়া হয়েছে। তাদের জামিন বাতিল, বিচারক মাহমুদা সুলতানাকে প্রত্যাহার, আন্দোলনে হত্যা এবং হত্যা চেষ্টা মামলার সকল আসামীর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আন্দোলনকারীকে হত্যা চেষ্টা মামলায় তিন আওয়ামী লীগ নেতাকে জামিন দেওয়াই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। তাদের দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির ডাক দিবেন বলে হুশিয়ারি দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আন্দোলনকারীকে হত্যা চেষ্টা মামলায় ভাই আসামিকে জামিন দিয়েছে আওয়ামী লীগের পরিবারের বিচারক মাহমুদা সুলতানা। আওয়ামী লীগের খুনিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আন্দোলনকারীকে হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারের দুইদিন পরে তিন কাউন্সিলরকে জামিন দিয়েছে। এছাড়া ছয় আসামিকে জামিন দিয়েছে তিনি। তাকে দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক। জামিনের ঘটনা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে কুষ্টিয়ায় আন্দোলনকারীদের হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলার সকল আসামিদের জামিন বাতিল করতে হবে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
আমাদের দাবি মানা না হলে আগামীতে আমরা কঠোর কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান। প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এলোপাতাড়ি মারপিট ও গুলি করে তামজিদ হোসেন জনি (২৬) নামে এক আন্দোলনকারীকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফকে নির্দেশদাতা আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪০/৪৫ জনকে। গ্রেপ্তার কাউন্সিলররা এই মামলার আসামি। গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কুমারখালী উপজেলার ঘোরাই গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে জিলহজ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন তিনি।
