বিএনপি‘র দুর্দিনের সৈনিক জেলা যুবদলের সমন্বয়ক আব্দুল মাজেদকে নিয়ে ষড়যন্ত্র - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

বিএনপি‘র দুর্দিনের সৈনিক জেলা যুবদলের সমন্বয়ক আব্দুল মাজেদকে নিয়ে ষড়যন্ত্র

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪

নিজ সংবাদ ॥ ২০০৬ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে যখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-এর সরকারের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। তৎকালীন সংবিধান অনুসারে, কোন দল ক্ষমতা হস্তান্তরের ৯০ দিন পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং মধ্যবর্তী ৯০ দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া তদারকি করবে ও এর অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

রাজনৈতিক সংকট শুরু হয় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের মাধ্যমে কারণ রাজনৈতিক দলগুলো অন্য পাঁচজন প্রার্থীর ব্যাপারে একমত হতে পারেনি। এই অন্তর্বর্তী সরকারের সূচনা হয় সহিংস বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে। প্রথম মাসেই ৪০ জন নিহত হয় ও শতশত আহত হয়। ব্যাপক আলোচনার পর দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আলোচনায় আনতে সমর্থ হয় এবং ৩ই জানুয়ারি ২০০৭ সালে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হয়। আওয়ামী লীগ থেকে ঘোষণা করা হয়, তারা নিজে ও এর সাথে যুক্ত ছোটদলগুলো ২২শে জানুয়ারি ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সাধারণ নির্বাচন বর্জন করবে।

তারা ভোটার তালিকা সঠিকভাবে প্রণয়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ উত্থাপন করে। পরবর্তীতে এটাকে কেন্দ্র করে দেশে আরো সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনকে সমর্থন করে সেনাবাহিনী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করে, এর পূর্বেই দেশে জরুরি অবস্থা জারি ছিল। ২০০৮ এর শেষ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট দুই তৃতীয়াংশ ভোটে জয় লাভ করে ও ২০০৯-এ সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ ও মহাজোট ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকেই সারা বাংলাদেশে শুরু হয় প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতা কর্মিদের উপর দমন-পীড়ন। সেই সময়ে বিএনপির অনেক নেতা কর্মি দেশের বাইরে চলে যায়। আবার অনেকেই দল ও দেশকে ভালোবেসে সক্রিয়ভাবে দলের বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করতে থাকে। বিএনপির সেই সমস্ত সক্রিয় নেতা কর্মিদের মাঝে আব্দুল মাজেদ অন্যতম। সে বর্তমানে কুষ্টিযা জেলা যুবদলের সমন্বয়ক হিসাবে সুনামের দায়িত্ব পালন করছে। আওয়ামীলী লীগ সরকারের শাসন আমলের গত ১৪ বছরে যুবদলের এই নেতা একাধিকবার আওয়ামী প্রতিহিংসার স্বীকার হয়েছেন। একাধিক মিথ্যা মামলা মাসের পর মাস তাকে জেলহাজতে কাটাতে হয়েছে।

তিনি পুলিশি হয়রানির স্বীকারও হয়েছেন একাধিকবার। এছাড়াও বিভিন্ন মামলায় হয়রানি এড়াতে মাসের পর মাস পরিবার ও পরিজন ছেড়ে তাকে আত্নগোপনে থাকতে হয়ে। বিএনপি করার কারণে বিভিন্ন সময়ে হয়রানির শিকার হয়েছে তার পরিবারের সদস্যরাও। কোন অপরাধ না করেও একাধিক মামলার আসামী হয়েছেন তার তিন ছেলে। মিথা মামলায় জেলহাজতেও যেতে হয়েছে তাদের। গত ১৪ বছরে কুষ্টিয়া জেলায় বিএনপির আন্দোলন এবং সংগ্রামে আব্দুল মাজেদ ছিলো প্রথম সারিতে। আওয়ামী লীগের দলীয় বাধা তো ছিলোই। সেই সাথে পুলিশি বাধাও ছিলো নিয়মিত।

আওয়ামী লীগের দলীয় এবং পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে তিনি কুষ্টিয়ায় বিএনপির সমস্ত অনুষ্ঠান এবং কেন্দ্র ঘোষিত যে কোন প্রোগ্রামে ছিলেন সবার আগে। তার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তার কারণে তার অনুসারীর সংখ্যাও ছিলো চোখে পড়ার মত এবং জেলা পর্যায়ের যে কোন সংগঠনের থেকে বেশী। গত ১৪ বছরে কুষ্টিয়াতে আব্দুল মাজেদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া বিএনপির প্রোগ্রাম ছিলো না বললেই চলে। কুষ্টিয়া ছাড়া কেন্দ্রীয় যে কোন প্রোগ্রামে সে তার নেতা কর্মিদের নিয়ে রাজধানী ঢাকাতে অংশ গ্রহণ করেছেন সব সময়। মামলা, হামলা ও পুলিশি নির্যাতনের স্বীকার হয়েও দমে যাননি তিনি।

অথচ ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে খোদ যুবদল এবং বিএনপির নেতা কর্মিরাই তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। দলের র্দূদিনে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মিদের যে কোন প্রয়োজনে এবং বিপদে আব্দুল মাজেদ সব সময় তাদের পাশে ছিলেন অভিভাবকের ভূমিকায়। আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে তিনি নেতা কর্মিদের আইনীলড়াইয়ে এবং অস্বচ্ছল কর্মিদের আর্থিকভাবে সহায়তা বিপুল অর্থ সহায়তা করেছেন বলেও জানা যায়। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের দোস্তপাড়া এলাকায় আব্দুল মাজেদের বাড়ী। তার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার পূর্ব পুরুষরা ছিলো এলাকার প্রভাবশালী এবং অনেক জমিজমার মালিক। পৈতৃক সুত্রে মাজেদ অঢেল সম্পত্তির মালিক।

এলাকায় তার একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে রয়েছে ট্রাকের ব্যবসা। যা থেকে প্রতিদিন তার ভালো আয় হয়। কিন্তু বিএনপির রাজনীতির সাথে সমপৃক্ত থাকায় সে একাধিকবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলায় অসংখ্যবার জেলে যেতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের ১৪ বছরের শাসন আমালে তার ক্ষতির পরিমান কয়েক কোটি টাকা। এছাড়াও তার পরিবারের সদস্যরাও নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং তার বাড়ি ঘরও বেশ কয়েকবার ভাংচুর করা হয়। জেলা বিএনপির অনেক নেতা কর্মি মনে করেন, দুর্দিনের যারা দলের পাশে ছিলো তাদের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র হলে সেটা দলীয় ভাবে মোকাবেলা করা জরুরী।

সেই সাথে ত্যাগী নেতা কর্মিদের মূল্যায়ন না করলে দলের বিপদে কাউকে পাশে পাওয়া যাবে না। বিএনপির জেলা পর্যায়ের একাধিক নেতা সাথে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের শাসন আমালের গত ১৪ বছরে আব্দুল মাজেদ ব্যবসায়িক ও আর্থিক ভাবে বিপুল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। দলীয় কর্মকান্ড কান্ডকে বেগবান করতে এবং টিকিয়ে রাখতে তিনি নিয়মিত অর্থের যোগানও দিয়েছেন তিনি। তাকে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে।