বাবা এবং দাদার মত মানবসেবায় নিজেকে উজাড় করে দিতে চান কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ
ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা আমিনুল ইসলাম মুকুল প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার ও বিশিষ্ট সমাজসেবক, মা সাহেদা বেগম স্থানীয় স্বস্তিপুর হাই স্কুলের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষিকা। ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ সম্প্রতি সাফল্যের সঙ্গে লন্ডন থেকে ‘বার এট ল’ সম্পন্ন করেছেন। তার দাদার নাম মৃত ফজলুলুল আলম। তিনি একজন সম্ভান্ত ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যারিস্টার সুইটি বাবা মায়ের বড় সন্তান। তার ছোট একটি ভাই আছে।

বাবা এবং দাদার মত মানবসেবায় নিজেকে উজাড় করে দিতে চান কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ
আইন পেশার সর্বোচ্চ ডিগ্রী ”বার এট ল” সম্পূর্ণ করায় কুষ্টিয়ার স্বনামধন্য বিদ্যাপিঠ মুসিলিম হাই স্কুলের সাবেক শিক্ষক আলহাজ্ব সোহরাব হোসেন এর সভাপতিত্বে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে । শুক্রবার বিকেল ৪ টায় আলমপুর বাজার সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রঙ্গনে তাকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে উপস্থিত হন এলাকার কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ ।
রাজধানী ঢাকার অভিজাত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ম্যাপেল লিফ স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ও লেভেল এবং এ লেভেলস সম্পন্ন করার পর লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ সাউথ (এলসিএলএস) এর অধীনে আইন বিষয়ে সম্মান ডিগ্রী অর্জন করেন। এর পর পশ্চিম ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেখানকার অধ্যাপক জেমস লাইডের অধিনে ‘বার এট ল’ কোর্স সম্পন্ন করে মেধার পরিচয় দেন। তার সেশন ছিল সেপ্টেম্বর ২০২০/২১, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২০০৩২১৩৯। চলতি ১২ অক্টোবর তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বার এট ল’ উত্তীর্ণের খবর জানানো হয়। ইংল্যান্ডের লিঙ্কনস ইনের সম্মানিত সোসাইটি থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা সেখানকার পত্রিকাতেও প্রকাশ করা হয়। লন্ডন থেকে প্রকাশিত দ্য টাইমস পত্রিকায় গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত ঐ খবরে ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদের নাম সিরিয়ালের ৮ নম্বরে রয়েছে।
ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ এর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া আইনজীবি সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম দুলাল, প্রবীন আইনজীবি সুশিল চন্দ্র, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন টিটু, খাতের আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ সত্য বিশ্বাস, এ্যাভোকেট পান্না, সাবেক মেম্বার সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা উম্বাদ আলী ও আব্দুস সালাম, খোর্দ্দ আইলচারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নওয়াব আলী, স্বস্তিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমীন, আলামপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাদুর রহমান এবং আলামপুর মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম সহ কুষ্টিয়া সদও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত জনপ্রতিনিধি বৃন্দ ।
মেয়ের এই অসামন্য কৃতিত্বেও বিষয়ে ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ এর মা সাহেদা বেগম বলেন, আগের থেকেই চিন্তাধারা আমার ছেলে মেয়েকে আমি এমন ভাবে তৈরি করবো যাতে মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারে । আমি ওর পাশে থেকে সব সময় আমার সাধ্যমত অনুপ্রেরণা যুগিয়েছি । আপনারা জানেন বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে আমাদের দিন গেছে, তাই হয়তো আপনারা আমাদেও ছেলে মেয়েদেও ঠিক মত চিনেন না । আসলে নানা ধরণের প্রতিকুলতার মধ্য দিয়েই ছেলে মেয়েকে বড় করেছি । আলাহামদুল্লিাহ আল্লাহ পাক সেই জায়গা থেকে একটা জায়গায় আমাদেরকে নিয়ে গেছে । আমাদেও ছেলে মেয়েদের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন, তারা যেন তারা বাবা ও দাদার মত বিপদে আপদে নিজেদের উজাড় করে দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে ।

ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ কাজ করতে চান দেশের অবহেলিত মানুষের জন্য । আর সেই লক্ষে তিনি নাগরিক তাদের অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন নন এবং ভোগান্তির ভয়ে আইন- আদালত এড়িয়ে চলেন। সবার আগে তিনি বঞ্চিত মানুষের পাশে থাকতে চান, তাদের জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে তিনি সচেষ্ট থাকবেন । আইন পেশার মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার্থে সুনির্দিষ্ট আচরণবিধির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি বিচার প্রার্থীদের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাবেন বলে জানান। দেশ ও সমাজের স্বার্থেই তিনি ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে স্বার্থের ঊর্ধে সত্য ও ন্যায় বিচারকে প্রাধান্য দিবেন ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ জানান, মায়ের মতো তারও শিক্ষকতা করার ইচ্ছা রয়েছে। তিনি আইন পেশার পাশাপাশি শিক্ষকতাকেও গুরুত্ব দিতে চান। তিনি এখনও নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি অনলাইনে আইন বিষয়ে ও ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষার্থীদের পাঠদান করান। তিনি বলেন, মানুষ ঘরে বসেই আইন সম্পর্কে জানা, সচেতন হয়ে নিজের অধিকার বুঝে নেওয়া এবং সর্বপরি কোন অবিচারের শিকার যেন না হয়, সে জন্য নিজের ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত ফ্রি আইন বিষয়ক পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রচুর মেধাবী ও সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্ম রয়েছে, তারা ব্যারিস্টার হতে চায় কিন্তু এই কোর্সটির বিষয়ে বিস্তারিত না জানার ফলে অজ্ঞাত ভয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।’ তিনি আগ্রহী তরুণ-তরুণীদের এ বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে চান, তাদের সব রকমের সহযোগিতা করতে চান। তিনি জানান, মেধা থাকলে সাধারণ ঘরের ছেলে মেয়েরাও লন্ডন থেকে ব্যারিস্টার কোর্সটি সম্পন্ন করে আসতে পারেন। এর জন্য দরকার নিয়মগুলো ভালোভাবে জেনে নেওয়া। ভবিষ্যতে সততা ও নিষ্ঠায় বিচারক হতে চাওয়া ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ড. খালেদ হামিদ চৌধুরী এন্ড এসোসিয়েটস এর অধীনে ঢাকায় আইন চর্চা করছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার সুইটি তারা বাবা ও ছোট ভাইয়ের অনুস্থিত থাকার কারণে আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, আজকের এই খুশির দিনে বাবা ও ছোট ভাইকে ভিষন ভাবে মিস করছি । সংবর্ধনা অনুষ্ঠনে ব্যারিস্টার সুইটি আহমেদ নিজ এলাকা কুষ্টিয়া সদর উপজেলাসহ দেশবাসীর নিকট দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার মায়ের দেখানো পথ অনুসরণ করে বাবা ও দাদার মত মানবসেবায় নিজেকে উজাড় করে দিতে পারি ।
