বন্যার্তদের সহায়তায় মাঠে ইবির অর্ধশত বিভাগ ও সংগঠন - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

বন্যার্তদের সহায়তায় মাঠে ইবির অর্ধশত বিভাগ ও সংগঠন

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: আগস্ট ২৬, ২০২৪

ইবি প্রতিনিধি ॥ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা কবলিত মানুষের সহায়তায় দেশব্যাপী গণত্রাণ সংগ্রহের কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। আর্ত-মানবতার সেবায় অংশ নিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রায় অর্ধ শতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠন, বিভিন্ন বিভাগ, শিক্ষক-কর্মকর্তারা এগিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুইটি দল বন্যার্তদের সহায়তায়  ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকায় পৌঁছেছে।

জানা যায়, আকস্মিক বন্যায় দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে ইবির শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমিতি প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা জমা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে আশেপাশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা সদরে ত্রাণ ও অর্থ সংগ্রহ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের তারুণ্য, বুনন, বই-বিহঙ্গসহ বেশকিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিভিন্ন জেলা সমিতি ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ফার্মেসি, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা বিভাগ সহ প্রায় প্রতিটি বিভাগ স্ব স্ব উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহের কাজ করছে।

এছাড়াও, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে গান গেয়ে পথচারীদের থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করছেন একদল শিক্ষার্থী। পাশাপাশি ক্যাম্পাস থেকে নিজ খরচে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, মাগুরা এবং পাবনা জেলায় অবস্থান করে দিনব্যাপী ত্রাণ সংগ্রহ করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে সব সংগঠন ও বিভিন্ন টিমের সংগ্রহকৃত ত্রাণের একটি অংশ এবং বিভিন্ন হল ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সংগৃহীত কাপড় চোপড় নিয়ে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুল আজ বন্যাকবলিত এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেকটা বিভাগ তাদের এলমনাই এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের  (বিকাশ-নগদ-রকেট-উপায়) মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছে। পাশাপাশি বন্যা পরবর্তী যে সংকট মোকাবেলায় এবং দুর্গতদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে সহায়তার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এ বিষয়ে ইবি পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দাস বলেন, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ইশ্বর।

আমরা আমাদের জায়গা থেকে বন্যার্তদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। এখানে বিষয়টি হলো আমরা অর্থ দান করছি না। আমরা আমাদের ভাই বোনদের জন্য সমব্যথী। ওখানে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল বলেন, আমাদের জানামতে প্রায় ৫০ টিরও বেশী সংগঠন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে, কেউ কেউ আবার সারাদিন মাঠে থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করে যাচ্ছে। আমরা সবাইকে একত্রিত করে একটি বড় এমাউন্টের অর্থ কালেক্ট করে একসাথে আগাতে চাচ্ছি। এতে আমাদের সবারই যে উদেশ্য সেটি সফল হবে এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বন্যার্তদের জন্য ভালোকিছু করতে পারবো। কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, আমাদের একদিনের বেতনের টাকা বন্যার্ত মানুষের সহায়তায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বেতনের টাকা ছাড় হলে আমাদের সমিতির ফান্ডে টাকা টা জমা করার পর ফান্ডের চেক প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল বরাবর জমা দিয়ে আসবো। সবমিলিয়ে আনুমানিক ৭/৮ লক্ষ টাকা হবে। আশাকরি আমাদের সাহায্যটা তাদের উদ্ধারকাজে ও পুনর্বাসনে অবদান রাখবে।  শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন,  সারাদেশ থেকেই মানুষ অর্থ, শুকনো খাবার, পানি, স্যালাইন নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু তাদের মূল স্ট্রাগলটা শুরু হবে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর। আমাদের বেতন আসলে টাকাটা কর্তন করে প্রধান উপদেষ্টার ত্রান তহবিলে জমা দেওয়া হবে। তারা সেনাবাহিনীর মাধ্যমে হোক বা অন্য কোন মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে যেটা প্রয়োজন করবে বলে আশাবাদী।