খোকসায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ
কুষ্টিয়ার খোকসায় স্বামী, শ্বাশুড়ি এবং নন্দে জামাইয়ের নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ বাসনা রাণী (২৮)। সুষ্ঠ বিচারের অপেক্ষায় এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসনের দরজায় ঘুরছেন ভুক্তভোগী নির্যাতিতা ওই নারী। নির্যাতিতা বাসনা রাণী খোকসা উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের ইচলাট গ্রামের গোবিন্দ সেনের ছেলে গৌতম সেনের স্ত্রী। নির্যাতনের ঘটনায় বাসনা রানী থানায় অভিযোগ করেছেন এবং আদালতে মামলা করবেন বলে জানান নির্যাতিতা নারীর ভাই রবীন্দ্র কুমার সরকার।

খোকসায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ
নির্যাতিতা গৃহবধূ ও তার স্বজনরা জানায়, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার বিন্নাডাঙ্গী গ্রামের রাজেন্দ্রনাথ সরকারের মেয়ে বাসনা রাণীর সাথে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের ইচলাট গ্রামের গোবিন্দ সেনের ছেলে গৌতম সেনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত গৌতম সেন ওরফে নবীন এবং নবীনের মা তার নন্দে জামাই সুব্রত বিশ্বাস এর কুপরামর্শে নানা অজুহাতে টাকা চেয়ে বাসনা রাণীর উপর নির্যাতন করে আসছে।
বাসনার হতদরিদ্র পিতার তেমন কোন সঙ্গতি না থাকলেও মেয়ের সুখের কথা ভেবে বিভিন্ন সময় তারা ধার-দেনা করে জামাইকে অনেক টাকা পয়সা যৌতুক দিতেন। গৌতম সেন ওরফে নবীন এবং তার মা অনিমা রাণীর সীমাহীন দাবি মেটানো বাসনার পরিবারের পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় এর মাশুল হিসেবে বাসনাকে তার শাস্তি ভোগ করতে হতো। বাসনা রাণীর দুই সন্তানও রয়েছে। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাসনা সবকিছু নীরবে সহ্য করে আসছিল। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা শালিস বৈঠক হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার দিবাগত রাতে গৌতম ও তার মা অনিমা রাণী বাসনার উপর দফায় দফায় নির্যাতন চালায়। অসহনীয় এ নির্যাতনে বাসনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। নির্যাতিতা ও তার স্বজনরা এ নির্মমতার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গৌতম সেন তার স্ত্রীর নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সে আমার ও আমার মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এ কারণে তাকে একটু মারধর করেছি।’
এবিষয়ে জানিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শুনেছি মেয়েটির পরিবার অনেক গরীব। অভিযোগ পেয়েছি, গৌতম সেন ওরফে নবীন মেয়েটিকে নানাভাবে প্রায়ই মারধর করে। এ নিয়ে একাধিকবার শালিস ব্যবস্থাও করেছি। কিন্তু গৌতম শালিস অমান্য করে পুনরায় আবার মেয়েটির উপর অমানুষিক নির্যাতন করে।’
