দৌলতপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যু - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

দৌলতপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যু

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জুলাই ১০, ২০২৪

দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের নাসির উদ্দীন বিশ্বাস পোয়ালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চালায় উঠে স্যান্ডেল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) সকাল ১০ টার সময় স্কুল বিল্ডিংয়ের টিনের চালায় জিসান (১০) কে স্যান্ডেল পাড়তে তুলে দেন প্রধান শিক্ষিকা মদিনা খাতুন, এসময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছাত্রটির মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসী নাসির উদ্দিন, আতিয়ার রহমান সহ অনেকে বলেন, আমরা সহ জিসান বিদ্যালয়ে আসি, তখন প্রধান শিক্ষক মদিনা খাতুন জিসানকে ডেকে স্কুলের টিনের চালায় উঠিয়ে দেয়। এমন সময় জিসান টিনের চালায় আটকিয়ে হাত-পা ছুড়তে থাকে। মাথে সাথে ম্যাডামকে আমরা ঘটনাটি বললে তিনি তখন বলেন, ও (জিসান) এমনিতেই এমন করছে, কোনো সমস্যা নাই।

পরে আমরা জিসানের  পরিবারের সদস্যদের ডেকে এনে বিদ্যুৎতের লাইন বন্ধ করে জিসানকে টিনের চালা থেকে নামিয়ে আনি। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, স্কুলছাত্র জিসান স্কুল অঙিনায় খেলা করা অবস্থায় তার পায়ের একটি স্যান্ডেল অপর এক পাগল শিশু পরিত্যক্ত স্কুলঘরের টিনের চালার ওপর ছুড়ে মারে।

গ্রীল বেয়ে স্কুলঘরের টিনের চালার ওপর থেকে স্যান্ডেল কুড়িয়ে আনতে গিয়ে পূর্ব থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে বিদ্যুতায়িত হওয়া টিনের চালায় জিসান বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়।

স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। শিক্ষার্থীর মা রিনা খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে ডেকে টিনের চালে তুলে দিয়ে হত্যা করেছে। প্রধান শিক্ষক মদিনা খাতুন আমি তার বিচার চাই।

এদিকে এই বিষয়ে মৃত ছাত্র জিসানের আত্নীয় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, থানার ওসি প্রধান শিক্ষিকাকে তিনি কিছু না বলে উল্টো আমাদের ধমক দিচ্ছেন। আমরা অসহায়, তাই কি বিচার পাবো না!

এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক মদিনা খাতুন’র সাথে কথা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ক্লাসে ছিলাম আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমাদের বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রাকিবুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে শিক্ষকের দোষ পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের সময় জিসান নামের ছেলেটিকে হাসপাতালে আনলে বিপি ও পালস পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।

এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট  হওয়া এক শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। স্কুলঘরে টিনের চালায় শিশুটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট  হয়েছে বলে শুনেছি।

এ ব্যপারে দৌলতপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, একজন স্কুল ছাত্রের মরাদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।