দৌলতপুরে পদ্মার ভাঙ্গনে হুমকির মুখে বিজিবি ক্যাম্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
যাঁরা সীমান্ত সুরক্ষা ও জননিরাপত্তায় সার্বক্ষনিক দায়িত্বে নিয়োজিত তাঁরাই এখন পদ্মা নদীর ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছেন। যেকোন মুহুর্তে পদ্মা গর্ভে বিলিন হতে পারে বিজিবি ক্যাম্প, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপনা। আতঙ্কে দিন কাটছে সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও গ্রামবাসীর। পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজন স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের।

দৌলতপুরে পদ্মার ভাঙ্গনে হুমকির মুখে বিজিবি ক্যাম্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন চিলমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। দু’টি সীমান্ত পিলার পদ্মা গর্ভে তলিয়ে গেছে। পদ্মার ভাঙ্গনে ভিটে মাটি সর্বস্ব হারিয়েছেন কয়েকশ’ পরিবার। ভাঙ্গনের মুখে হুমকিতে রয়েছে উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্প। ক্যাম্প থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে রয়েছে পদ্মা নদী। যেকোন মুহুর্তে পদ্মা গর্ভে বিলিন হতে পারে বিজিবি ক্যাম্প। ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে অরক্ষিত হতে পারে সীমান্ত এলাকা এমনটি জানিয়েছেন উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার সিরাজুল ইসলাম।
কুষ্টিয়া সেক্টরের ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনস্থ চরচিলমারী কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার মুরাদ জানিয়েছেন, পদ্মার নদীতে পানি কমার সাথে সাথে চিলমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে হুমকির মুখে রয়েছে উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্প। যেকোন মুহেুর্তে ক্যাম্পটি নদী গর্ভে বিলিন হতে পারে। সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি ক্যাম্পটি রক্ষার জন্য দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
উদয়নগর গ্রামের ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন জানান, মাত্র কয়েকশ’গজ দূরে ভারত সীমান্ত। পদ্মার ভাঙ্গনে বিজিবি ক্যাম্প নদী গর্ভে তলিয়ে গেলে উদয়নগর সীমান্ত এলাকা অরক্ষিত হয়ে পড়বে। বাড়বে অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা। ফলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী ও ভারতীয় নাগরিকদের অত্যাচর নির্যাতনের ভয়ে পদ্মা নদী বেষ্টিত উদয়নগর গ্রামের শত শত পরিবার আতঙ্কিত হয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামবাসীর দাবি অতিদ্রুত বিজিবি ক্যাম্পসহ উদয়নগর গ্রামকে রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।

আতারাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হুমকির মুখে রয়েছে আতারাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অসংখ্য স্থাপনা। যেভাবে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, যেকোন সময় পদ্মা গর্ভে বিলিন হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ওইসব স্থাপনা। ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে শিক্ষা ব্যবস্থাও পড়বে হুমকিতে। ফলে চরবাসী বঞ্চিত হবে শিক্ষার আলো থেকে।
তবে পদ্মার ভাঙ্গন থেকে বিজিবি ক্যাম্পসহ উদয়নগর গ্রাম রক্ষার জন্য অস্থায়ীভাবে জিও ব্যাগ ফেলে পদ্মার ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান জয়। তিনিও জানান স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না হলে হুমকিতে থাকবে বিজিবি ক্যাম্পসহ গ্রামবাসী।
দৌলতপুর সীমান্ত সুরক্ষায় প্রয়োজন দ্রুততার সাথে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের। এমনটি দাবি পদ্মার ভাঙ্গন কবলিত হুমকিতে থাকা চরবাসীর।
