দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ভুল চিকিৎসায় কুলসুম খাতুন (২৩) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আল্লাহরদর্গা এলাকার আনোয়ারা বিশ্বাস মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের ভুলের কারণে সকালে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকের ভুল ও অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনরা। এ ঘটনায় দোষী চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। নিহত কুলসুম খাতুন (২৩) কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষীকোলা গ্রামের রায়হান আলীর স্ত্রী। তার স্বামী পেশায় কাঠমিস্ত্রী। নিহতের শ্বশুর সবুজ আলী বলেন, প্রসবজনিত কারণে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৭টার দিকে প্রসূতি কুলসুমকে আল্লাহরদর্গা এলাকার আনোয়ারা বিশ্বাস মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং ভর্তি করি।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। রাত ৮টার দিকে তারা অস্ত্রোপচার করেন। একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। অস্ত্রোপচারের পর থেকে ক্রমেই রোগীর অবস্থা আশংকাজনক খারাপ হতে থাকে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় অবস্থা বেগতিক দেখে রোগীকে জোরপূর্বক রাজশাহী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আমরা হাসপাতাল থেকে যেতে চাইনি। রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেলেও কোনও চিকিৎসা দেননি চিকিৎসক বা হাসপাতালের কোনও স্টাফ। বুধবার সকালে চাপ প্রয়োগ করে জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে বের করে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আশংকাজনক অবস্থায় তাকে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সেখানকার চিকিৎসক সাড়ে ১১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের ভুলের কারণে নিহতের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের ভুলের কারণে কুলসুমের মৃত্যু হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে আনোয়ারা বিশ্বাস মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, কুলসুমের অপারেশন সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। ভুল চিকিৎসা বা অবহেলায় তার মৃত্যু হয়নি। আমরা রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। হার্ট অ্যাটাকের কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি নিশ্চিত করে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
