দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ সারা দেশের ন্যায় সিমান্তবর্তি উপজেলা কুষ্টিয়ার দৌলতপুরেও চলছে তিব্র তাপপ্রবাহ। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা পশু-পাখিসহ জনজীবনে। তবুও জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীদের। এদিকে তিব্র এই তাপপ্রবাহে ডাইরিয়া ও গরম জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতে ভর্তি হয়েছেন শিশুসহ বয়জেষ্ঠরা। অন্যদিকে তাপপ্রবাহের কারনে ফসলের খেত পুড়ে নষ্ট হচ্ছে আবাদ। জমিতে পানিসংকট ঠেকাতে সেচ দিতে হচ্ছে কৃষকদের। এদিকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় খাবার পানি ও জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হাঁসফাঁস জনজীবনে স্বস্তি পেতে পুকুর কিনবা গভীর সেচ পাম্পের পানিতে স্বস্তি খুঁজছেন অনেকে। কুষ্টিয়া আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য বলছে, গত শনিবারের তুলনায় সোমবার তাপমাত্রা কমেছে কিছুটা। যা গত শনিবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তা সোমবার কমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, এরমধ্যে বৃষ্টির কোন সম্ভবনা দেখা যাচ্ছেনা। এই তাপপ্রবাহ স্থায়ী হতে পারে আরো কয়েকদিন। উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের দিনমজুর ওবায়দুর রহমান বলেন, প্রচন্ড চোদের তাপে কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। মাঠে এখন ফসল কাটা ও মাড়ায়ের ব্যাস্ততা বেশি। গরমে কষ্ট হলেও কাজ করতে হবে। তা না হলে সংসার চলবে না ভাই। ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাদাম চাষি ইবাদত শেখ বলেন, রোদের তাপে বাদামের গাছ পুড়ে মারা যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে এবার ফলন না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। দৌলতপুর সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম জানান, টিউবওয়েলে খাবার পানি পাচ্ছিনা এমনকি মটোরেও পানি উঠছেনা আমাদের এলাকায়। আকরাম হোসেন নামের এক সেচ যন্ত্র চালক বলেন ফসলের মাঠে সেচের জন্য বসানো নলকূপেও পানি উঠছেনা। সকালে আর রাতে একটু পানি পেলেও দুপুরে একেবারেই পানি উঠেনা। এদিকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় খাবার পানি ও জমিতে সেচের পানির সংকটের বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী খাদেমুল ইসলাম বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর কিছুটা নিচে চলে যাওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। মানুষের মাঝে সুপেয় পানি নিশ্চিতে আমাদের প্রকল্পের কাজ চলমান। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে চাষিদের ফসল রক্ষায় জমিতে সেচ পরামর্শের পাশাপাশি নানান নির্দেশনা মূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এসময় দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম আরো বলেন, তিব্র এই তাপপ্রবাহের কারনে ফসল উৎপাদন খরচ বাড়বে কৃষকের। ফসল রক্ষায় চাষিদের বার্তি খরচে দিতে হচ্ছে সেচ। তবে তিব্র এই তাপপ্রবাহের এ অঞ্চলের মানুষকে ধিলে ধালা কাপড় পড়ার ও বেশি বেশি পানি পানের পাশাপাশি দুপুরে ঘরের বারে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ । এছাড়া দৈনন্দিন খাবারেও পরিবর্তন আনার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়া ও গরম জনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ বাড়ছে। ডাইরিয়া রোগ নিয়ে আজকে শিশুসহ ৩২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এর মধে শিশু ২৯ জন। এসময় এই কর্মকর্তা বলেন হাসপাতালে সজ্জা সংখার থেকে রোগীর সংখ্যা প্রায় দিগুন। এতে সেবা প্রদানে হিমসিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
