দৌলতপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর দুর্গম চরে খড়ের মাঠ দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই বাহিনীর বন্দুক যুদ্ধে তিনজন নিহতের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে। তবে এঘটনায় জড়িত কাওকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গত রোববার রাতে কাকন বাহিনীর সদস্য নিহত লিটন হোসেনের ভাই আলী হোসেন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মন্ডল বাহিনীর ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে মণ্ডল বাহিনীর সদস্য নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মণ্ডল বাদী হয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। জানা গেছে, ৯০ দশকে জন্ম নেয়া পান্না বাহিনীর সদস্য এই মন্ডল বাহিনী, তারা ২০০৯ সাল পর্যন্ত চরাঞ্চলে হত্যা, গুম, জমি দখল, দিনে দুপুরে বাড়ি থেকে সুন্দরী মেয়েদের জোর করে তুলে নেয়াসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। ২০০৯ সালে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে পান্না বাহিনীর প্রধান ও তার ভাই ছাফাত মারা যায়।
তার পর থেকে চরাঞ্চলে শান্তি ফিরে আসে। উল্লেখ্য, গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী দৌলতপুরের মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজা নামক এলাকায় খড়ের মাঠ দখল কে কেন্দ্র করে বাঘার মণ্ডল বাহিনী ও দৌলতপুরের কাকন বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ গোলাগুলির ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সে সময় নিহত হন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিচ খানপাড়া এলাকার মিনহাজ মণ্ডলের ছেলে আমান মণ্ডল (৩৬) এবং শুকুর মণ্ডলের ছেলে নাজমুল মণ্ডল (২৬)। নিহতরা মূলত কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন।
নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে তাঁরা বাঘার নিচ খানপাড়ায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন। অন্যদিকে পরদিন মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পদ্মা ঘাট থেকে কাকন বাহিনীর সদস্য ও কসমেটিকস ব্যবসায়ী লিটন হোসেনের (৩০) মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা নৌ পুলিশ। তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তিনি ঘোষপাড়া এলাকার মৃত জামিরুল ইসলামের ছেলে। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, পদ্মার চরে দুই বাহিনীর বন্দুক যুদ্ধে ৩জন নিহতের ঘটনায় আরও একটি নতুন মামলা হয়েছে। তবে এই দুটি মামলার কোনো আসামিকেই এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
