কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় কৃষিজমি ও রাস্তার পাড় খনন করে মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। ইট ভাটাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রয়োজনে এসব মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে।

রাতদিন সমানে চলছে মাটি কাটা। কোথাও কোদাল, আবার কোথাও ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটার হিড়িক পড়েছে। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে এই মাটি কাটার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন সম্পূর্ণ নীরব বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। উপজেলার আড়িয়া গ্রামে ফসলের মাঠের মাঝখানে কৃষিজমিতে এবং বাহিরমাদী সদরঘাট থেকে আলীনগর রাস্তার পাড় ঘেঁষে ফসলের মাঠ সংলগ্ন জায়গায় দিনের পর দিন চলছে মাটিকাটা। সচেতন এলাকাবাসী মাটি কাটা বন্ধের জন্য নানা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে মাটি কেটে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ গাড়িতে করে যেসব রাস্তা দিয়ে নেয়া হয়, সেসব রাস্তায় মাটি পড়ে থাকায় অনেক সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। সরেজমিন দেখা যায়, আড়িয়া মাঠে ২০ থেকে ২৫টি শ্যালো গাড়িতে করে মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। ভেকু মেশিনে (মাটিকাটা যন্ত্রের প্রচলিত নাম) মাটি কেটে ফসলের ক্ষেতের মাঝ দিয়ে চওড়া রাস্তা করে চলছে মাটির গাড়ি। জানা গেছে, এই মাঠ থেকে দিনে অন্তত ২০০’র বেশি গাড়ি মাটি কাটা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, একটি কবরস্থানে প্রয়োজনের নাম করে মাটি কাটা শুরু করলেও পরে এটি নিয়ে ব্যবসা চলছে। ড্রাম ট্রাক (ভারি মালবাহী বড় গাড়ির প্রচলিত নাম) আর শ্যালোর গাড়ি ভরে এসব মাটি যাচ্ছে ইট ভাটাসহ নানা জায়গায়। অন্যদিকে উপজেলার বাহিরমাদী ও আলীনগর এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কৃষিজমির মাটি উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ৯৯৯-এ ফোন করা হলে ওই এলাকায় সাময়িকভাবে মাটি কাটা বন্ধ রাখা হয়েছিল। কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারো মাটি কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। সরেজমিন এলাকাটিতে দেখা যায়, রাস্তার পাড় থেকে গভীর করে মাটি কাটা হয়েছে মাইলের পর মাইল। রাতের আঁধারে এসব মাটি কেটে অবৈধ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি ও ট্রাকে পরিবহন করা হয়। গাড়ি অনুযায়ী মাটির দাম নির্ধারণ করা হয়। এসব মাটির মূল বাণিজ্য দৌলতপুর ও পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলার ইট ভাটায়। এছাড়া ইট ভাটাগুলোতে মাটির তৈরি ইট পোড়ানো হয় কয়লার বদলে কাঠের আগুনে। দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে টপ সয়েল বা ভূপৃষ্ঠ কাটার বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটি আইনি ভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। মাটি কাটা বন্ধের জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি।
