নিজ সংবাদ ॥ বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট, কুষ্টিয়া জেলা শাখার উদ্যোগে চাকুরী জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে শিক্ষক সমাবেশ গতকাল শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের নির্বাহী সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম ভূঁইয়া প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন সরকার, মাওলানা মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম ভূঁইয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এমপিওভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকুরী জাতীয়করণ করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মনোনয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী মোঃ জাকির হোসেন সরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বিএনপি বিএনপি ক্ষমতায় এলে জিডিপির শতকরা পাঁচ ভাগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেয়া হবে। তিনি আরোও বলেন, আপনারা যে দাবীতে আন্দোলন করছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পাই, তাহলে এই দাবীতে আপনাদের আর কোন দিন আন্দোলন করতে হবে না। অপনারা জানেন তারেক রহমান যে ৩১ দফা দিয়েছেন, সেই ৩১ দফার ২৪তম দফায় উনি পরিস্কার করে বলেছেন শিক্ষা খাত খেকে সমস্ত নৈরাজ্যকে দূরিভূত করা হবে।
সেই সাথে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে শিক্ষা খাতে। আমরা জানি ৫ লক্ষ শিক্ষক আপনারা আন্দোলন করছেন। বিভিন্ন ভাবে আমরা শুনেছি জাতীয়করণ করতে খুব বেশী টাকা পয়সার দরকার হয়না। ৫ শতাংশ যদি শিক্ষা খাতে বরাদ্দ করা হয়, তাহলে কি আর আন্দোলন করা লাগবে। আর কখনোই আন্দোলন করা লাগবে না। ৩১ দফা নিয়ে যখন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা হয়, সেখানে আমিও ছিলাম। দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। দক্ষ, যোগ্য জনশক্তি, এই মানব সম্পদ কারা তৈরি করবে? আপনারা তৈরি করবেন। শিক্ষকদের সাহায্য ছাড়া দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়া করেন মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম।
একাত্তরে শহিদ বুদ্ধিজীবি ও ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী আব্দুর রাজ্জাক ও নাসরিন সুলতানাসহ অসুস্থ শিক্ষকদের সুস্থতা কামনা করে মুনাজাত করা হয়। টেলি কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন অসুস্থ শিক্ষক নেতা কাজী আব্দুর রাজ্জাক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকারিয়া। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ নওয়াব আলী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজী এনামুল হক আসাদ, দি ওল্ড কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আশরাফুল আলম উজ্জ্বল, গড়াই মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাহবুবুল আলম, আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এস এম ইদ্রিসুজ্জামান জাহিদ, শরীফ রেজা প্রমুখ। শিক্ষক সমাবেশে কুষ্টিয়া জেলার স্কুল ও কলেজের শিক্ষকবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
