নিজ সংবাদ ॥ কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিকে বির্তকিত উল্লেখ করে কমিটি বাতিলের দাবিতে ঢাকাস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অনশন কর্মসূচী করেছেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি সহ অঙ্গ সংগঠনের ত্যাগী ও পদ বঞ্চিত নেতা কর্মিরা। গতকাল রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও অনশন করেন তারা। এ সময় মামা-ভাগ্নের অবৈধ কমিটি বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা স্লোগান দেয়। এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামিম উল হাসান অপু, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদার, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেজবাউর রহমান পিন্টু, খোকসা পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহমেদ খান রাজু, জেলা বিএনপির সাবেক শিশু বিষয়ক সম্পাদক মীর মমিনুর রহমান সুজন প্রমুখ।
এছাড়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবির, জালাল উদ্দিন মোল্লা, সদর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান শিপন, জেলা বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর খান এ করিম অকুলসহ অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী, যাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়নি। সমাবেশে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজল মজমাদার বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তা মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদের দাবি এই কমিটি ভেঙে দিয়ে দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করা হোক। এই নেতা বলেন, এখানে যারা (আমরা) এসেছি বিগত আন্দোলনে সংগ্রামের সবার ফটো রয়েছে। কিন্তু যাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, তারা একটা ছবিও দেখাতে পারবে না।
সমাবেশে বক্তব্যকালে জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. শামিমউল হাসান অপু বলেন, আজকে আমরা কুষ্টিয়ার ত্যাগি, পরীক্ষীত ও পদ বঞ্চিত নেতা কমিরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও অনশনের পথ বেছে নিয়েছি। আপনারা জানেন প্রথমে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। দীর্ঘ দিন পরে কমিটি হওয়ার কারণে, আমরা সবাই এই কমিটির প্রতি আস্থা স্থাপন করেছিলাম। বিএনপির হাই কমান্ড যেহেতু এই কমিটি দিয়েছে, তাই আমরা তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলাম। আমাদের প্রত্যাশা ছিলো তারা দুইজন সর্বসম্মতিক্রমে একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে। আমাদের আরো প্রত্যাশা ছিলো তারা কুষ্টিয়ার বিএনপির সকল নেতা কর্র্মিকে সাথে নিয়ে, স্বজন প্রীতির আশ্রয় না নিয়ে, বিতর্কের উদ্ধে থেকে একটি সুন্দর আহ্বায়ক কমিটি করবে। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম অন্যায়ভাবে, আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব মামা-ভাগ্নে দুইজন মিলে ত্যাগি পরীক্ষিত নেতা কর্মিদেরকে বাদ দিয়ে কমিটি করেছে।
যারা দীর্ঘ ১৬ বছর আন্দোলন-সংগ্রামে সবার আগে ছিলো, তাদেরকে বাদ দিয়ে তাদের পকেটের লোক, বির্তকিত লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। যাদের আন্দোলন-সংগ্রামে কোন ভূমিকা নেই। আমরা অবিলম্বে এই পকেট কমিটির বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সমাবেশ থেকে দাবি জানানো হয়, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী দুঃশাসনে নির্যাতিত নিষ্পেষিত নেতাদের বাদ দিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা এই কমিটিতে পদ পেয়েছেন তাদের দীর্ঘ ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রাম থেকে শুরু করে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ কারণে অবিলম্বে আহ্বায়ক কমিটি বাতিল করে দলের ত্যাগী নেতাদের নিয়ে নতুন করে কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে বিতর্কিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির পদ বঞ্চিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তিন দিনের ওই কর্মসূচি অনুযায়ী গত বুধবার কুষ্টিয়া শহরের ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। গতকাল রবিবার (১২ জানুয়ারি) ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও অনশন করা হয়েছে এবং আগামী ১৬ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায় অনশন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন তারা।
