কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
কুষ্টিয়া জেলার নবাগত জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এহেতেশাম রেজা এঁর সাথে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সকল কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সুশীল সমাজ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক বৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভাপতি অনুষ্ঠিত হয়।

কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়ার নবাগত জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মাছুম, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব বাদশা, উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শাহানাজ পারভীন, কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান, ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননুর জায়েদ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীলের সভাপতিত্বে ও উপজেলা ভূমি কমিশনার দবির উদ্দিন বিশ্বাসের সঞ্চালনায় এসময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জেবুন নেসা সবুজ, উজান গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছানোয়ার হোসেন মোল্লা। বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন, সফল মাশরুম চাষী সাইফুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা বলেন আপনারা জানেন বাংলাদেশে অনেকগুলো বড় ডেভেলপমেন্ট সাধিত হয়েছে, এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে যেসসব ডেভেলপমেন্ট তার মধ্যে অন্যতম শিক্ষা কোয়ালিটি এডুকেশন আমাদের এখানে যে সামাজিক ব্যাধি মাদকের কথা আলোচনা করা হলো। সামাজিক ব্যাধি সমূহ আছে এগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে কারণ হলো আপনার পরিবারের কেউ যদি মাদকাসক্ত হয় তাহলে আপনার পরিবারের সকল সুখ শান্তি বিনষ্ট হয়ে যাবে আর সে যদি কখনো মাদক মামলা খায় তাহলে সে কোনো ধরনের সরকারি চাকরি পাবে না তার জীবনটাই নষ্ট হয়ে যাবে।
একইভাবে এরকম একটা একটা করে পরিবার, সমাজ থেকে উপজেলা জেলা এই মাদকাসক্তির পরিমাণ যদি বেড়ে যায় সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় যদি আরো বেড়ে যায় উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হবে। আমাদের এই উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল ভোগ করতে হলে মাদক প্রতিরোধে একাধিক সর্বস্তরের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সন্ধার পর আপনার ছেলে কোথায় যাচ্ছে কাদের সাথে মিশছে এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। সে বাইরে গিয়ে কোন মাদকাসক্ত বন্ধুর সাথে মিশছে কিনা বা কোন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে কিনা, এগুলো নজরে রাখতে হবে।
পড়ালেখার পাশাপাশি একজন শিক্ষক এখানে বলেও গিয়েছেন যে সন্ধ্যার পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় অনেকে মাদক গ্রহণ করে থাকেন, আমরা এই বিষয়টি দেখব আমরা অভিযান পরিচালনা করব। মাদকসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কিছু প্রোগ্রাম গ্রহণ করা যেতে পারে। ক্লাসের মাঝে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিডিও ক্লিপের মাধ্যেমেই মাদকের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা যেতে পারে। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যানগন রয়েছেন চেয়ারম্যানগনদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে স্থানীয়ভাবে মাদক প্রতিরোধ করার জন্য। জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা ছাড়া শুধুমাত্র লরেন্সিং এজেন্সির একার পক্ষে মাদকমুক্ত করা সম্ভব না। কুষ্টিয়া ইউএনডিপির যে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স রিপোর্ট প্রকাশ করে তাতে কুষ্টিয়ার অবস্থান পঞ্চম। কুষ্টিয়া তুলনামূলক উন্নত যার কারণে এখানে অনেকগুলো প্রকল্প কম গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
এই জেলাতে অনেক সংস্কৃতির পূর্ণতা কর্ণধার ব্যক্তি এখানে জন্মগ্রহণ করেছেন এই জেলায় রাধা বিনদ পালের মত মানুষ জন্মগ্রহণ করেছিলেন।জাপানের রাজধানী টোকিও স্কয়ারের এখনো রাধা বিনোদ পালের একটা ভাস্কর্য রয়েছে, আর এ কারণে জাপান সরকার বাংলাদেশ কে প্রচন্ড সম্মান করে এবং তারা জাপান সরকার বাংলাদেশকে বলেছে যে যতদিন জাপান সরকার থাকবে বাংলাদেশ খাদ্যাভাবে থাকবে না।
কুষ্টিয়াকে বাংলাদেশের সংস্কৃতির রাজধানী বলা হয়। কুষ্টিয়ায় সংস্কৃতি যারা চর্চা করে তারা অনেক পজেটিভ মাইন্ডেড। কিন্তু কিছু বিচ্ছিন্নবাদী মানুষ মাঝে মাঝে অপরাধ কর্ম করার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। প্রতি বর্গকিলোমিটারের কুষ্টিয়া সদরে প্রায় ১৩৩ জন বসবাস করে। তাই সবকিছু দায়িত্ব প্রশাসনের উপর না দিয়ে যদি নিজেরা সচেতন হন এবং নিজ নিজ দায়িত্ব যদি সঠিক ভাবে পালন করা হয় তাহলে অপরাধ অনেক কমে যাবে। কুষ্টিয়া এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন অনেক বেশি এখানে লাইক ইঞ্জিনিয়ারিং আছে মাঝারি ভারি শিল্প অনেক, যে কারণে এখানে মানুষের কর্মসংস্থান অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, আপনাদের এখানকার যিনি মাননীয় সংসদ সদস্য তিনি দলীয় বড় অবস্থানে রয়েছে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে রিচ করতে পারেন। এই এলাকার ডিমান্ড সহজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করতে পারেন তিনি। এটি আপনাদের জন্য একটা বড় পাওয়া।

সর্বশেষে এখানে যারা সরকারি আমরা কর্মচারী আছি তাদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি সেটি হল আমরা যারা যে দায়িত্বই আছি আমরা যদি দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করি আমাদের উপর অর্পিত দায় দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি প্রধানমন্ত্রীর যে সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন টি বাস্তবায়ন করতে অনেক বেশি সহজ হবে।
মতবিনিময় সভা শেষে কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্মাননা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
