কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে স্বজন ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১১ টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক অফিসের সামনে কালেক্টরেট চত্ত্বরে কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’র হত্যার বিচারের দাবী করে তার স্বজন ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে তারা তুলি’কে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসাবে ”কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চক দৌলতপুর গ্রামের মৃত তক্কেল আলী’র ছেলে পেশায় আইনজীবী মাহমুদুল হাসান সুমন’কে দায়ী করেছেন ।

কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে স্বজন ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন
মানববন্ধনে জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’র স্বজনেরা দাবী করেন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেই সাথে তারা জানান এখন পর্যন্ত তুলি’র ব্যবহৃত মোবাইল, খাবারের বাটি এবং পোশাকের কিছু অংশ উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধেও তারা অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী তুলি’র একাধিক স্বজন বলেছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর পরও প্রধান অভিযুক্ত কিভাবে ঘটনা স্থল ত্যাগ করে আতœগোপনে চলে গেলো, পুলিশের সাহায্য ছাড়া যা মোটেও সম্ভব নয়।
মানববন্ধনে জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’র চাচী বলেন- তুলির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ তারা দেখেছে। এটা কোনভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। তাকে মেরে ফেলে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসী ও স্বজনদের পক্ষ থেকে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, তুলি’র মোবাইল এর মধ্যে কি এমন ছিলো, যে মোবাইল ফোন গুম করা হয়েছে। নিশ্চয় মোবাইল ফোনে এমন কিছু ছিলো যা জনসম্মুখে আসলে হত্যাকারীদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে যেত। যার ফলে মোবাইল ফোন গুম করা হয়েছে ।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তুলি’র মোবাইল ফোন দ্রুত উদ্ধার করে মোবাইলের ফরেনসিক করাসহ কল রেকর্ড অনুসন্ধানের দাবী জানান।
মানববন্ধনে জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’র স্বজন ও এলাকাবাসী মাহমুদুল হাসান সুমন’র ফাঁসি দাবি করে স্লোগানও দিয়েছেন। মানববন্ধন শেষে তুলি’র স্বজন ও এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর প্রদান করা হয়েছে ।
যেখানে বলা হয়েছে ঘটনার দিনের বিবরণ সহ নিরপেক্ষভাবে সি.আই.ডি তদন্ত, অতিদ্রুত এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতার এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারের দাবী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সামনের গলির মফিজউদ্দিন লেনের নবী ও মিতা দম্পত্তির পাঁচতলা বাড়ীর তিন তলার একটি ফ্লাট থেকে আনুমানিক সন্ধা ছয়টার পরে টেনে হিচড়ে নামানো হয় কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’কে । এরপর সন্ধা ছয়টা ৩২ মিনিটে মোবাইল ফোনে ফোন করে খবর দেওয়া হয় তুলি’র ভগ্নিপতিকে। সন্ধ্যা আনুমানিক সাতটার দিকে তুলি’র পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং তারপর তুলি’র নিথর দেহ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’কে দেখামাত্রই মৃত বলে ঘোষনা করেন ।
এদিকে ঘটনার দিন ২২ শে আগস্ট জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি’র মা বাদ শরীফা বেগম বাদী হয়ে তুলি’কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবী করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় এই বিষয়ে একটি অভিযোগ জমা দেন। ঘটনার পরের দিন ২৩ আগস্ট কুষ্টিয়া মডেল থানা এই বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে । মামলা নং ৫৮ ।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে ইতিমধ্যে ৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে । আসামী ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে ।
