জনগণের স্বার্থে সৎ,গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধ বাছাই জন্য নূন্যতম ভোট বেঁধে দেয়ার সময় এসেছে - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

জনগণের স্বার্থে সৎ,গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধ বাছাই জন্য নূন্যতম ভোট বেঁধে দেয়ার সময় এসেছে 

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: মে ১১, ২০২৪

রঞ্জুউর রহমান ॥ নির্বাচন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগণ প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়। সপ্তদশ শতক থেকে আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন একটি আবশ্যিক প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।আধুনিক গণতন্ত্রে প্রতিনিধি বাছাইয়ের উপায় হিসেবে নির্বাচনের সার্বজনীন ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু গত ৮ মে ২০২৪ কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচনে নজির বিহীন কম সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে। কুষ্টিয়া সদরে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লক্ষ ২০ হাজার ৮৩৩ জন সেখানে সর্বমোট ১৩ ইউনিয়নে ১৪৫ টি কেন্দ্রে ভোট দেন ৭৩ হাজার ২৯৯ জন তার মধ্যে ৭১ হাজার ৪৫ টি ভোট বৈধ এবং ২ হাজার ২৪৫ টি অবৈধ ভোট। সারাদিন ভোট গ্রহণ শেষে ১৭ শতাংশ ভোট পোল হয়। আনারস পথিক নিয়ে আতাউর রহমান আতা ৬৭ হাজার ৪৮১ ভোটে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বাকি ৮৩ শতাংশ ভোটার ভেবে নিয়েছে যে এবার আপনারা ভোট দেবেন না, নির্বাচনী কেন্দ্রে যাবেনই না। আমার ধারণা তারা কেনো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ রকম সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে তাদের  ভাবনাগুলো এ রকম হতে পারে ভোট দিয়ে কিইবা হবে? সেই একই দল তো জিতবে। আমার ভোট এমনিতেই চুরি হয়ে যাবে। আমি ভোট দিলাম বা নাই দিলাম, দুর্নীতি তো চলতেই থাকবে। আমার কাউকে ভোট দেওয়ার নেই, সবাই তো এক। যথেষ্ট মানুষ আছে ভোট দেওয়ার। আমার একটা ভোট দিয়ে কিছু যায় আসে না। আমার ভোট দিতে ভয় লাগে। কে জানে কী হবে সেদিন। এমন একজন মানুষও আছে বলে মনে হয় না, যিনি দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান না। পুস্তকে গণতন্ত্র সম্পর্কে যেসব কথা লেখা আছে ঠিক, সেইরূপ একটা নির্বাচনের প্রত্যাশা সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা প্রায়ই টিভির পর্দায় টকশো তে করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে বর্তমান বিশ্বে কোনো দেশের ওইরূপ একটা নির্বাচন হয়েছে বা ভবিষ্যতে হবে—এরূপ সম্ভাবনা নেই বললে চলে। অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দি পিপল, বলতে যে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে তারাও এখনো পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। নির্বাচনে পরাজিত হলে নির্বাচন ব্যবস্থাকেই অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করা ঠিক হবে না। নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহিষ্ণু হতে হবে। মোটকথা, গণতন্ত্র ও বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির যতই ত্র“টি থাকুক এর কারণে ভোট দানে বিরত থাকা সমীচীন হবে না বরং বুদ্ধি-বিবেচনা খরচ করে, ভেবে-চিন্তে ভোটারাধিকার প্রয়োগ করতে হবে ভাল-মন্দের ভালো অথবা অন্তত কম মন্দের পক্ষে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ভোটদানের অর্থ, এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, লোকটি তার প্রতিদ্বন্দ্বিদের তুলনায় কিছুটা হলেও ভালো। আজকে যদি আমরা সঠিক প্রার্থী না–ও পেয়ে থাকি, কালকে পাব। কিন্তু এটা সম্ভব যদি আমরা নির্বাচনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারি।আমরা যদি নির্বাচনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারি এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার চর্চা ধরে রাখতে পারি, তাহলে আমরা ভবিষ্যতে ভালো ও উপযুক্ত প্রার্থীদের উৎসাহ দিতে পারি নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য।আমরা এটা করতে পারি নির্বাচনে আপনার উৎসাহ ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে, আপনার গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চার মাধ্যমে, আমরা করতে পারি আমাদের ভোটের মাধ্যমে। তাহলে আসুন, নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করি। যদি আজকে আপনি এটার কোনো ফল নাও দেখে থাকেন, আমি নিশ্চিত যে ভবিষ্যতে এটার ফল আসবেই।