সোমবার ২১ শে অগাস্ট বিকেল সাড়ে চারটায় কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে এবং জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে ২১ শে অগাস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী’র পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা তাঁতিলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ । এর পর গীতা পাঠ করেন জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. শিলা বসু । এছাড়াও উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতের স্মরনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনা করা হয় ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের জ্যোষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ডাঃ আমিনুল হক রতন, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার ঘোষ, জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. হারুন অর রশীদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ, জলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. শিলা বসু, যুব ও ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার ইকবাল মাহমুদ, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. আ স ম আখতারুজ্জামান মাসুম।
জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য এবং কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তাইজাল আলী খান, জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি জেবুন নেছা সবুজ, জেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম মানিক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার, মৎস্যজীবী লীগ নেতা সাইদুর এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ । এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা এবং জেলা আওয়মীলীগের দপ্তর সম্পাদক তরিকুল ইসলাম মানিক সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মিরা ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ২০০১ সালে পাতানো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এসে ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট ন্যাক্কারজনক এবং পরিকল্পিত এই গ্রেনেড হামলা করে । হাওয়া ভবন থেকেই এই হামলার পরিকল্পনা করা হয় । বিএনপি-জামাত এই গ্রেনেড হামলার মধ্য দিয়ে আওয়ামীলীগকে নেতৃত্ব শূণ্য করে দেশের ক্ষমতায় স্থায়ী ভাবে আসীন হতে চেয়েছিলো ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী বলেন, ২১ শে আগস্ট বোমা হামলা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা । ২০০৪ সালের এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আওয়ামীলীগকে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল বিএনপি-জামায়েত জোট সরকার। কিন্তু তারা পারে নাই । তাদের এই হামলার জবাব এই দেশের মানুষ পরবর্তি জাতীয় নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে দিয়েছিলো । কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বিএনপি-জামাত আজ জয় বাঙলা ¯েøাগান দিয়ে আমাদের সাথে মিশে আছে । তাদের প্রকৃত রুপ এখন খোলাসা হতে শুরু করেছে । তারা গোপনে তাদের পূর্বের সেই রুপে ফিরতে শুরু করেছে । তারা এখন আওয়ামীলীগের ঘাড়ে বসে আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামাত’র সাথে হাত মিলিয়ে সরকার পতনের চেষ্টা করছে ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী আরো বলেন, আমাদের নিজেদের সংশোধন করতে হবে । আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে, আমরা খারাপ কাজ করবো না, খারাপ জায়গায় যাবো না । আমাদের আত্ন শুদ্ধির মাধ্যমে দলের জন্য কাজ করতে হবে । আওয়ামীলীগ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি, আওয়ামীলীগের নেতা কর্মিরা জানে কিভাবে আন্দোলন করতে হয় এবং যদি কেউ আন্দোলনের নামে দেশ অস্থিতিশীল করতে চাই ও দেশের উন্নয়নকে বাঁধা গ্রস্থ করতে চায় তাহলে তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে । আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামাত আবার ২১ শে আগস্টের মত নারকীয় ঘটনার পুরাবৃত্তি করতে পারে, তাই সবাই সবাই সজাগ থাকবেন ।
আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মি হিসাবে এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করেছি দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার । বঙ্গবন্ধুর রক্ত এদেশের মাটিতে পড়েছে, গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমান সহ যারা শহীদ হয়েছেন ঐ দিকে লক্ষ রেখে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে, ঐক্যবদ্ধভাবে সকল অপশক্তিকে রুখে দিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে হবে । কুষ্টিয়াতে আমরা আপনাদের সাথে নিয়ে, নেতাকে সাথে নিয়ে আগামী নির্বাচনে কুষ্টিয়ার ৪ টি সিট শেখ হাসিনাকে উপহার দেবো ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন খান বলেন, এদেশের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তার জীবণ দিয়েছেন । সেই সময় আমরা কিছু করতে পানি নাই । নিজেদের মধ্যে যে সম্পর্ক, দ্বিধা-দ্বন্ধ সেই দ্বিধা-দ্বন্ধ আমরা কাটাতে পারি নাই । খুনি জিয়াউর রহমান, খুনি মুস্তাক ৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ট বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বঙ্গমাতা সহ তার পরিবার পরিজনকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিলো, জাতীয় চার নেতাকে হত্রা করেছিলো ।
বঙ্গবন্ধু’কে হত্যা করে খুনি জিয়াউর রহমান, খুনি মুস্তাক । আর ২১ শে আগস্টে বোমা হামলা করে খুনি খালেদা আর তার পুত্র তারেক রহমান । হাওয়া ভবনে বসে তারা পরিকল্পনা করে । শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নাসির উদ্দিন পিন্টুর বাসায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য মুক্তি হান্নান’কে ডাকে । সেই হান্নান সেনাবাহিনীর চৌকস কিছু তারেক জিয়ার ভক্ত , তাদেরকে প্রমোশনের লোভ, অর্থের লোভ দেখিয়ে ২০০৪ সালের আজকের এই দিনে তারা এই হত্যাজজ্ঞ পরিচালনা করে ।
তার আগে খালেদা জিয়া বলেছিলো, ৫০ বছরেও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসবে না । সে জানতো, আওয়ামীলীগকে নিঃচিহৃ করলে আর ক্ষতায় আসীন হওয়ার কোন সুযোগ নাই । তেমনি ভাবে এই হত্যাকান্ড পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের লক্ষে কিছু আগাম কর্মকান্ড তারা করেছিলো, যেমন দেশে সামরিক শাসন আসার প্রয়োজন হলে বিভিন্ন সময় বিশৃঙ্খলা, আইন শৃঙ্খলা সব মিলায়ে দেশ পরিচালনার সাথে যারা থাকে তার ব্যর্থ হয় । ঠিক তেমনি ভাবে ২১ শে আগস্টের ঘটনাও তাই ।
উপস্থিত নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন খান বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন । নিজেদের মধ্যে ঐক্যের কোন বিকল্প নাই । দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি রক্ষার্থে আওয়ামীলীগের কোন বিকল্প নাই । তাই সবাই আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আবারও আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করার লক্ষে যার যার অবস্থান থেকে কাজ শুরু করুন ।
