কুষ্টিয়ায় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের আলোচনা সভা
২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । ২৫ শে মার্চ শনিবার বিকেল ৩ টায় কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগ অফিসের সম্মেলন কক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় ।

কুষ্টিয়ায় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের আলোচনা সভা
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন খান এবং পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী ।
এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী ফারুক উজ জামান, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক তরিকুল ইসলাম মানিক, জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড, শিলা বসু, জেলা মহিলালীগের সভাপতি জেবুন নিসা সবুজ, জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রুহুল আজম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুল হক পুলক, জেলা আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার ইকবাল মাহমুদ, জেলা যুবলীগের নেত্রী ও হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শম্পা মাহমুদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুল ইসলাম অনিক এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ, ।
এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া জেলা সকল উপজেলা থেকে আগত উপজেলা এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মিরা ।
আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী বলেন, ২৫ শে মার্চের গণহত্যার মত এত বড় জঘন্যতম ঘটনা বিশ্বের আর কোথাও ঘটেনি । নিরস্ত্র মানুষের উপরে একঝাঁক সুসজ্জিত বাহিনী নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে নৃশংস ভাবে হত্য বিশ্বের ইতিহাসে নজির বিহীন।

আজগর আলী আরো বলেন, এই গণহত্যা দিবস বিশ্বব্যাপী প্রচার করতে হবে, যেন এই দিবসটি বিশ্বের মানুষ পালন করে । প্রধানমন্ত্রীর একক চেষ্টায় ২১ শে ফেব্রুয়ারী যেমন আন্তজার্তিক ভাবে ভাষা দিবস হিসাবে পালন হচ্ছে । এই গণহত্যা নিরস্ত্র মানুষের উপরে নৃশংস হত্যা হয়েছে । এটা বিশ্বের মধ্যে জঘণ্যতম অপরাধ । যা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি ।

উপস্থিত নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে আজগর আলী বলেন, আমরা যা করতে পারি নাই, আমি বিশ্বাস করি তোমরা পারবে । এই অগ্নিঝরা মার্চ মাসে যেই ইতিহাস শুনছো এবং আমাদের বলার সুযোগ হয়েছে । পালন করার সুযোগ হয়েছে । এই অগ্নিঝরা মার্চ মাসে নিজেরা সংকল্প বদ্ধ হও, ঐক্য বদ্ধ হও । রাজাকার আলবদরদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আমরা এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী হয়েছেন । আবার এদেশের মাটিতেই তাকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে । ১৫ ই আগস্ট তাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে । জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার মত নিরাপদ জায়গায় হত্যা করা হয়েছে । তাদের ঐ রক্তের দিকে তাকিয়ে এই অগ্নিঝরা মার্চ মাসে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে । যারা আলবদর রাজাকার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তাদের কে বাংলাদেশের মাটি থেকে আমরা উৎখাত করবোই ।
আলোচনা সভার সভাপতি এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন খান বলেন, ৭৫ এর ১৫ ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে শহীদ হয়েছিলেন । আজকে ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস । এই দিবসের কালো রাত্রে রাত একটায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয় । আজ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাত ১০ টা এক মিনিটে এক মিনিটের জন্য সমস্ত কিছু অন্ধকারে আচ্ছন্ন থাকবে ।

সদর উদ্দিন খান আরো বলেন, আজকে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের তালিকা হয় নাই । রাজাকারদের তালিকা হয় নাই । বাংলাদেশের বিপক্ষে যারা ছিলো আর্দশিক ভাবে তারা এখনো রয়ে গেছে । এটাই আমাদের দূর্ভাগ্যে । তারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না । তারা বাংলাদেশের পতাকা বিশ্বাস করে না । তারা গণহত্যা দিবস বিশ্বাস করে না । তারা ৭ ই মার্চ বিশ্বাস করে না । তারা বঙ্গবন্ধুকে এখনো কটাক্ষ্য করে কথা বলে । আবার তারা স্বপ্ন দেখে ৭৫ এর পট পরিবর্তন আবার হবে । এই দেশে তা আর হবে না । এই দেশের ক্ষমতায় আমরা আছি । আওয়ামীলীগ সাড়ে ২৩ বছর দেশ পরিচলনার দায়িত্ব পালন করেছে । যা প্রায় স্বাধীনতার অর্ধেক সময় । কিন্তু আমাদের দলের নেতা কর্মিদের, আমরা কি পেয়েছি, কি দিয়েছি, কি করেছি, এই ভাবনা গুলো যদি আমাদের নীতি নির্ধারকরা করেন । সামনে আমরা বলি আমাদের সমস্যা, আমাদের ভোটের বিপর্যয় । আমাদের এই সমস্যা, সেই সমস্যা । এই কথাগুলো বলার অপেক্ষা রাখে না । বর্তমান প্রেক্ষাপটে যারা ভালো কাজ করে তাদের পদোন্নতি পাওয়া জরুরী দরকার । কিন্তু পদোন্নতি না পেয়ে তারা পদ হারান । যারা মিছিল মিটিং করেন তাদের কি অবস্থা । যারা টেন্ডারবাজী করে তারা ফেবারিট নেতা হয় । বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত যারা অবৈধ ব্যবসা করে তারা জেলার নেতা হয় । এটাই বাস্তবতা ।
উপস্থিত নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে সদর উদ্দিন খান আরো বলেন, আমি বিশ্বাস করি এই সময় বেশি দিন থাকবে না । আদর্শিক নেতৃবৃন্দর সময় আসবেই । স্বাধীনতার পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আশপাশে যেসব সহকর্মিরা ছিলো তাদের মধ্যে কে বিশ্বস্ত আর কে বিশ্বাস ঘাতক এইটা সে চিনতে পারেনি । যারা তাকে হত্যা করলো তাদেরকে সে পদোন্নতি দিয়েছিলো । তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রেক্ষাপটও জেলা পর্যায় পর্যন্ত একই অবস্থা । আপন পর যতক্ষন পর্যন্ত না বুঝা যাবে ততক্ষন পর্যন্ত বিপর্যয় রক্ষা করা যাবে না ।
