খোকসাতে কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা করে না ভেজাল গুড় তৈরির দুটি কারখানা - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

খোকসাতে কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা করে না ভেজাল গুড় তৈরির দুটি কারখানা

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: এপ্রিল ২৯, ২০২৪

কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়া খোকসায় একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও  চলছে ভেজাল গুড়ের কারখানা দুটি । ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানেও বন্ধ হয় না এগুলো। খোকসা পৌরসভার কালীবাড়ি ও ডাকবাংলা মোড়ে অবস্থিত কারখানাগুলো। বছরের পর বছর ধরে ভেজাল গুড়ের কারখানা  মেসার্স দিলীপ ট্রেডার্স ও নিত্য গোপাল  ভেজাল গুড় তৈরি করে আসছে। এক প্রকার প্রশাসন কে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে চলে তাদের কারবার। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। বেশ কয়েকবার হয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। একাধিক বার সীলগালা করা হয়েছে কারখানাটি। সর্বশেষ  (২৩ শে জানুয়ারি ২০২৪)  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিধান কান্তি হালদারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হলেও এতে  কারখানাটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষের ভাস্য লোক দেখানো অভিযান করে উপজেলা প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, কারখানাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, নিন্মমানের চিনির সাথে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে ভেজাল আঁখের গুড় তৈরীর । প্রতিষ্ঠানের প্রধান দিলীপ বিশ্বাস সষ্ঠী ও তার ভাই রাজকুমার বিশ্বাস এই সব পরিচালনা করে থাকেন।  এর পরেও অদৃশ্য শক্তির বলে বারবার পাড় পেয়ে যায় ভেজাল কারবারিরা। এবং পূনরায় শুরু করে তাদের ভেজাল কারবার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খোকসা উপজেলার বাজারের ডাকবাংলো রোডে মেসার্স দিলীপ ট্রেডার্স ও কালীবাড়ি রোডে নিত্য গোপালের ভেজাল গুড়ের কারখানায় চলছে ভেজাল উৎপাদন। চিনির সাথে নাম মাত্র গুড়ের সংমিশ্রণে মানব দেহের ক্ষতিতকারক ক্যামিকেল মিশিয়ে জমাট বাঁধিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। কারখানাটির নেই কোন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বা বিএসটিআই অনুমোদিত কোন কাগজপত্র। এতো কিছুর পরেও ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে চলে যায়। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন থেকেই যায়। দিলীপ বিশ্বাস সষ্ঠী বলেন, আমাদের কারখানাটির মধ্যে কোন ভেজাল গুড় তৈরি করা হয় না। আমরা সব নিয়মকানুন মেনে গুড় তৈরি।  মাতৃভান্ডার ও দিলীপ ট্রেডার্স নামে ভেজাল গুড়ের এ কারখানায় প্রতিদিন কেমিক্যাল রং, ফিটকারি ও চিটাগোরসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ভারতীয় গুড়ের সংমিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল গুড়। কুষ্টিয়া জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার আকুল উদ্দিন বললেন, ডাইং কারখানার রং, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, ফিটকারি ও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য মানবদেহের জন্য প্রচন্ড ক্ষতিকর। ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক ও কিডনি ড্যামের সহ নানাবিধ রোগের উৎপত্তি হয় এ সকল কেমিক্যালে। গুড়ে এ সকল রং ও কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুড তৈরি করতেছে। এ সকল ভেজাল গুড় যা জনস্বার্থে হুমকির মুখে এবং বড় ধরনের ক্ষতি সম্মুখিন হচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা। এ ব্যাপারে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননূর যায়েদ এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অজ্ঞাত কারণেই কেন যে এই কারখানাটির কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না সেটা আমার বোধগম্য। খোকসা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানা জানান, উপজেলায় ভেজাল গুড় কারখানায় একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত করা হয়েছে। নতুন করে আবার কার্যক্রম চলছে আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। অবশ্যই আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এমতাবস্থায় ভোক্তাদের ভেজাল গুড় থেকে রক্ষাকল্পে কারখানা দুটির অবৈধ উৎপাদন বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।