খাদ্য নিরাপত্তায় আইন প্রয়োগের চেয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি অধিক কার্যকর: হানিফ এমপি - কুষ্টিয়া জিলাইভ | truth alone triumphs

খাদ্য নিরাপত্তায় আইন প্রয়োগের চেয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি অধিক কার্যকর: হানিফ এমপি

লেখক: প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: জুন ৪, ২০২৪

রঞ্জুউর রহমান ॥ কুষ্টিয়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার ৩ জুন সকাল দশটা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ খাদ্য মন্ত্রণালয় এর আয়োজনে, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান(অতিরিক্ত সচিব) জাকারিয়া,এর সভাপতিত্বে বিভাগীয় পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাংসদ মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি,এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,কুষ্টিয়া-৪ সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ এমপি, কুষ্টিয়া-১ সাংসদ মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী এমপি,কুষ্টিয়া -০২ সাংসদ মোঃ কামারুল আরেফিন এমপি,জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ তারেক জুবায়ের, জেলা পরিষদ কুষ্টিয়া চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ সদর উদ্দিন খান এবং জেলা ও উপজেলার জনপ্রতিনিধিগণ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন, বাংলাদেশ নিম্নপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), আবু নুর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, সাধারণত যেসব আহার্য জীবদেহের বৃদ্ধি, শক্তি উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ এবং ক্ষয়পূরণ করে অর্থাৎ দেহের পুষ্টি সাধন করে তাকে খাদ্য বলে। দেয়ের কাজকর্ম সুষ্ঠুরূপে পরিচালিত করে দেহকে সুস্থ ও কাজের উপযোগী রাখার জন্য যে সকল উপাদান প্রয়োজন, সেসব উপাদানই খাদ্য খাদ্যের নিরাপদতা খাদ্যের নিরাপদতা হলো এক বা একাধিক পদক্ষেপ যা ভোক্তার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খাদ্যকে বিভিন্ন দূষক বা বিপত্তি যেমন: ভৌত দ্রব্য, অনুজীব (ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস), রাসায়নিক দ্রব্য ও অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান থেকে রক্ষা করে। খাদ্যকে দূষিত করতে পারে তথা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক খাদ্যস্থিত যে-কোনো কিছুকে খাদ্যবিপত্তি বলা হয়। খাদ্য সংশ্লিষ্ট বিপত্তি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে খাদ্যের সাথে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দূষিত খাবার খেয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হচ্ছে। কেউ কেউ আবার সারা জীবনের জন্য রোগাক্রান্ত হাচ্ছে এবং বংশ পরম্পরায় আক্রান্ত হচ্ছে। খাদ্যবাহিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলা এবং যারা আগে থেকেই অন্য কোনো কারণে অসুস্থ। অনিরাপদ খাদ্যের লক্ষণ দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে খাবারের রং, গন্ধ, গঠন পরিবর্তন দ্বারা খাবারের অনিরাপদতা বুঝা যায়। খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার কারণ রাসায়নিক ও এনজাইমজনিত গঠনগত কারণে বাইরের আর্দ্রতা, আলো, তাপ, জীবাণু, অক্সিজেন প্রভৃতির প্রভাবে পচনে সহায়তাকারী ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট, মোল্ড ও ভাইরাসের মত অণুজীব এর সংক্রমণে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ, ইত্যাদি খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে, যা থেকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যবাহিত রোগ তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।প্রাকৃতিক এবং আমাদের অভ্যাসগত ও অসাবধানতাজনিত কারণেও খাদ্য অনিরাপদ হয়। উৎপাদন ও প্রস্তুত পর্যায়েও দূষণের কারণে খাদ্য অনিরাপদ হতে পারে।খাদ্য সাধারণত ৪টি উপায়ে অনিরাপদ হয়১। ভৌত-ধুলা-ময়লা, চুল, পাথর কণা ও আর্বজনা, ইত্যাদির উপস্থিতিতে। রাসায়নিক মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ (যেমন: কীটনাশক এর অবশিষ্টাংশ এন্টিবায়োটিক, সংরক্ষণ দ্রব্যের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, আর্সেনিক, সীসা ইত্যাদি)-এর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির ফলে; জৈবিক-ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ও অন্যান্য জীবাণুর উপস্থিতির ফলে; এবং অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী-কিছু কিছু পদার্থ যেমন গ্লুটেন, ল্যাকটোজ ইত্যাদির উপস্থিতির কারণে। কুষ্টিয়া -২ সাংসদ মোঃ কামারুল আরেফিন এমপি বলেন, আমাদের অনিরাপদ খাদ্য থেকে জনগণকে সচেতন রাখতে হবে এবং নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে অভ্যাস গড়তে হবে। কোন ব্যক্তি বা ব্যবসায়ী খাদ্যে ভেজাল দিলে দেশের মানুষের অভিশাপ লাগবে তাই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে মানুষকে নিরাপদ খাদ্য প্রদান করবেন। তিনি আহ্বান জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এবং আপনাদের সম্মিলিত চেষ্টার মাধ্যমে দেশের মানুষের মাঝে নিরাপদ খাদ্য প্রদান সুনিশ্চিত করতে হবে। কুষ্টিয়া-৪ সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রউফ এমপি বলেন, নিরাপদ খাদ্য প্রদান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ। তাই তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদেরকে তিনি আহ্বান করেন নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে স্থানীয়জনগণকে সচেতন করা এবং স্থানীয় হাট-বাজারে নিরাপদ খাদ্যের বিষয়টা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখভাল করার। এসময় প্রধান অতিথি মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, নিরাপদ খাদ্যে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। খাদ্যে ভেজাল মেশানোর জন্য শাস্তির বিষয়ে যে আইন আছে সে বিষয়ে সকলকে অবগত করতে হবে। খাদ্যে ভেজালের কারনে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে। প্রায় ২৭% মানুষ অসুস্থ হচ্ছে নিরাপদ খাদ্যের অভাবে। যারা জেনে বুঝে খাদ্যে ভেজাল সৃষ্টি করছে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। হানিফ এমপি আরো বলেন, স্বাস্থ্য সচেতন হলে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ রোগ কমে যাবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। জনগনের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, সরকারি করর্মকর্তাদের উপরে দায় দিলে হবে না। নিজ জায়গা থেকে সকলে সচেতন হতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে স্থায়ী ল্যাব স্থাপনের দাবী জানান তিনি। নিরাপদ খাবারের তালিকায় পানি পরীক্ষা করে নিশ্চিত করার আহ্বান করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সভাপতি জাকারিয়া বলেন, খাবার নিরাপদ করার চেষ্টা চলছে। নিরাপদ না হলে সে খাবার ধ্বংস করা হবে বলে জানান।